নিজস্ব সংবাদদাতা: খারাপ সংবাদ বাঙালির জন্য, আপাতত পাতে পড়বেনা দিঘার ইলিশ। ১৫ই জুন পাঁজি মেনে মৎসজীবীদের নৌকা, ট্রলার, ভুটভুটি ভাসানোর কথা ছিল সমুদ্রে কিন্তু করোনা ভীতিতে ‘যাত্রা নাস্তি’ হয়ে গেল। কথা ছিল এদিনই খুলবে পূর্ব উপকূলের সব চেয়ে বড় মাছের বাজার, দৈনিক যেখানে আড়াই থেকে তিন হাজার ক্রেতা আসেন আর অর্ধকোটি টাকার লেনদেন হয় সেই দিঘা মোহনা বাজার। কিন্তু স্থানীয় জনতার করোনা ভীতি থেকেই প্রবল আপত্তি থেকেই আপাতত খোলা হচ্ছেনা এশিয়ার এই বৃহত্তম মাছের পাইকারি বাজার। আর বাজারই যখন খুলবেনা তখন মাছ ধরে কী হবে? সুতরাং পড়েই রইল জাল আর নৌকা।
সোমবারই শেষ হয়েছে ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া টানা ২ মাসের বাজার বন্ধের সময়সীমা।এদিন থেকেই সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়ার সরকারি দিনক্ষণ স্থির হয়েছিল। কিন্তু করোনার কারণে সংক্রামণ রোধে দিঘা মোহনার মৎস্যনিলাম কেন্দ্র খোলার ব্যাপারে বেঁকে বসেন বাসিন্দারা।মাছের বাজার চালু হলে বহিরাগতদের আনাগোনায় করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা থেকেই পাইকারি মাছের বাজার খোলাতে আপত্তি জানান স্থানীয়রা।একই ভাবে শঙ্করপুর, পেটুয়া মৎস্য বন্দর ও শৌলা মৎস্য আহরণ ক্ষেত্রে চালুর বিরোধিতাও করেন মানুষ। সুরাহা খুঁজতে রবিবার বৈঠকে বসে শঙ্করপুর, শৌলা, পেটুয়া এবং দিঘা মোহনার মৎস্যজীবী এবং মৎস্য ব্যবসায়ী সংগঠন। বাসিন্দাদের আপত্তি মেনেই সিদ্ধান্ত হয় ৩০ জুন পর্যন্ত মৎস্য বন্দর ও নিলামকেন্দ্র বন্ধ রাখার। বন্ধ থাকছে সমুদ্রযাত্রাও।
মৎসজীবীদের বক্তব্য মাছের বিচরন ক্ষেত্র সমুদ্রের ১০থেকে ২৫কিলোমিটার ভেতরে। কখনও সখনও আরও ভেতরে যেতে হয়। সমুদ্রে জাল বিছিয়ে মাছ ধরে লঞ্চ বোঝাই করে ফিরতে ফিরতে সাত থেকে বারো পনের দিন। সবটাই নির্ভর করে কত দুরে কি পরিমান মাছ পাওয়া গেল তার ওপরে। সেই মত রসদ নিয়ে সমুদ্রে যাওয়া। সেই মাছ ধরে ফিরে যদি বাজারই না পাওয়া যায় তবে কী লাভ? ফলে অধরাই রইল আপাতত দিঘার ইলিশ।
এর আগে স্থানীয়দের আপত্তিতে হোটেল চালু করার পরেও স্থানীয়দের আপত্তিতে হোটেল বন্ধ করে দিতে হয়। সেখানেও আপত্তি ছিল পর্যটকদের হাত ধরে করোনা ছড়াতে পারে। এবার মাছ ধরাও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে মৎসজীবীরা। আর লকডাউনের বাজারে বাইরের বাজারে ইলিশ সরবরাহ হতে পারার সুযোগে রুপালি শষ্যের দাম কম হওয়ার আশায় ছিল বাঙালি কিন্তু সে গুড়েও আপাতত বালি।