নিজস্ব সংবাদদাতা- প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার, নার্স এবং যারা করোনা আতঙ্কের মধ্যেই নিরলস কাজ করে চলেছেন তাদের উৎসাহিত করতে বাড়ির ব্যালকনি থেকে হাততালি দিতে বা কাঁসর ঘন্টা থালা ইত্যাদি বাজাতে। অথচ গোটা দেশের পাশাপাশি বাংলাও দেখল এর উল্টো চিত্র। সারাদিন জনতা কারফিউতে রাস্তায় লোকজন না দেখা গেলেও বিকেল পাঁচটা বাজতেই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে শঙ্খধ্বনির পাশাপাশি কোথাও থালা কোথাও কাঁসর ঘন্টা বাজানো হল। কয়েকটি জায়গায় তো কার্যত মিছিল করে কাঁসর ঘন্টা বাজানো হয়। ফলে সারাদিন যে সতর্কতা দেখা গেছিল সন্ধ্যে নামতেই উলটপুরান শুরু হল। যে দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এযেন ভারতীয় ফুটবল দলের খেলা। নব্বই মিনিট দারুন খেলেও অতিরিক্ত সময়ে সেমসাইড গোল খেয়ে ম্যাচ হেরে বসা।
গতকাল পাঁচটা বাজার সঙ্গে সঙ্গেই বেশিরভাগ গ্রাম শহরে রাস্তার দখল নেয় সাধারণ মানুষ। প্রায় প্রত্যেকেই ঢাক ঢল বাজিয়ে মিছিল করতে থাকেন। রাজ্য সরকারের সাত জনের বেশি একসাথে না থাকার নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একের পর এক মিছিল হতে থাকে। একাধিক জায়গায় বাজিও ফাটানো হয়।সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক ভিডিও ছড়িয়ে পড়তে থাকে। একটি ভিডিওতে দেখা যায় এক মহিলা কাঁসর বাজিয়ে বাজিয়ে চিৎকার করছেন “গো করোনা গো”। এর সাথেই যেভাবে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন গুলি গোমূত্র পান করলে করোনা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে বলে প্রচার করছে তাতে আরো অন্যান্য অসুখ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাই করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জনগনের এই অদ্ভুৎ আচরণে আক্রান্তের সংখ্যা কমার বদলে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যানই যার প্রমান দিচ্ছে। ২২ তারিখ পর্যন্ত গোটা দেশে যেখানে প্রায় ৩১৯ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন, সেখানে এখনো পর্যন্ত নতুন করে ৯৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। ধীরে ধীরে ভারতে স্টেজ থ্রির দিকে এগোচ্ছে করোনা সংক্রমণ।তবে এসবের মধ্যেও আসার খবর মোট ২৩ জন আক্রান্ত সম্পুর্ন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে মুক্তি পেয়েছেন, যেখানে মৃতের সংখ্যা ৭ এ পৌঁছেছে। তাই জনগনের মধ্যে সচেতনতা না বাড়লে সংক্রমণ রক্ষা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
পাশাপাশি কাল পাঁচটার পরই যেভাবে রাস্তায় নেমে মানুষ কাঁসর ঘন্টা থালা বাজিয়েছে তাতে যারপরনাই বিরক্ত স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তিনি টুইট করে জানান “এখনো পর্যন্ত লকডাউনকে অনেক মানুষ গুরুত্ব সহকারে দেখছেন না।দয়া করে নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে বাঁচান। সরকারি নির্দেশাবলিকে গুরুত্বসহকারে পালন করুন। রাজ্যসরকারগুলিকেও অনুরোধ করি যথাযথ ভাবে নিয়ম এবং আইন পালন করার ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।”