ভীষ্মদেব দাশ, পটাশপুর (পূর্ব মেদিনীপুর):এক যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে লকআপে পিটিয়েছিল পুলিশ। সেই কারণে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে যুবককের এমনই অভিযোগ করলেন মৃত যুবকের পরিবারের সদস্যরা। যদি সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। যুবককে না পেয়ে যুবকের কাকাকে তুলে নিয়ে গিয়ে থানায় বেদম প্রহার করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার মৃত্যু হওয়া ওই যুবকের পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছেনবলে জানিয়েছেন। যদিও মারধরের ঘটনা অস্বীকার করে পুলিশের দাবি ১৫দিন আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল যুবককে। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সেই গ্রেপ্তারের কোনও যোগসূত্র নেই।
জানা গেছে মৃত ব্যক্তির নাম মদন ঘোড়ই (৩২)। এই ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য, ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর-১ ব্লকের কনকপুর গ্রামে। কনকপুর গ্রামেরই যুবক কিশোর ঘোড়ই মাস কয়েক আগে স্থানীয় বাসুদেবপুরের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ পাখুরিয়ার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। আগে থেকে ছেলে-মেয়ের প্রেম ছিল বলে জানা যায়। মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পরই মেয়ের বাবা গৌরাঙ্গ পাখুরিয়া পটাশপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
অভিযোগ পাওয়ার পর পটাশপুর থানার পুলিশ অভিযুক্ত কিশোর ঘোড়ইর খোঁজে তল্লাশি শুরু করে। নাবালিকা অপহরণে যুক্ত থাকার অপরাধে পরিবারের লোকেদের খোঁজও শুরু করে। পুলিশ কিশোর ঘোড়াইর বাড়ি গিয়ে খোঁজ করলেও কারোর খোঁজ পায়নি। বাড়িতে কাউকে না পেয়ে পাশের বাড়ি থেকে গত ২৬শে সেপ্টেম্বর ছেলের কাকা মদন কুমার ঘোড়ইকে তুলে নিয়ে যায়। কাঁথি আদালতের নির্দেশ মতো জেল হেফাজতে ছিলেন মদন ঘোড়ই। জেলে থাকাকালীন শরীর খারাপ হয় তাঁর। শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য কোলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মদন ঘোড়ইকে। মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ পুলিশ লকআপের ভিতরে পিটিয়ে খুন করেছে। বেদম মারধর করার জন্য অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। পুলিশ পিটিয়ে খুন করেছে ছেলেকে, পুলিশের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই লড়বেন বলে জানিয়েছেন মৃত মদন ঘোড়ইর বাবা বসন্ত ঘোড়ই। লকআপের ভিতরে সিসিটিভি রয়েছে, আগে থেকে অসুস্থ ছিলেন মদন এমনটাই জানালেন পটাশপুর থানার ওসি চন্দ্রকান্ত শাসমল। ওসি আরও বলেন, এইসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। উনি অসুস্থ ছিলেন, আদালতে তোলার আগে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। মারধর হলে মেডিক্যাল সার্টিফিকেটে তা উল্লেখ থাকত। এলাকার বাসিন্দাদের কথায় ছেলের দোষে হাজতবাস করতে হল কাকাকে। তাঁর মৃত্যুর জেরে শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা।