নিজস্ব সংবাদদাতা: শুধু হেলমেট পরলেই হবেনা, মানতে হবে সঠিক হেলমেট বিধি। হাফ হেলমেট কিংবা গলায় অস্বস্তি লাগে বলে হেলমেটের বেল্ট খুলে রাখা এমন কি হেলমেটের বেল্ট আলগা হলেও রেহাই নেই মৃত্যুর হাত থেকে। এমনই মর্মান্তিক ঘটনার স্বাক্ষী থাকল মেদিনীপুর-কেশপুর রাজ্য সড়ক। মাথার হেলমেট রয়ে গেল মাথার ঠিক ওপরেই। আর তার তলা দিয়ে বাসের ধাক্কায় গুঁড়িয়ে গেল মাথা।
সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত পাঁচখুরিতে বাসের ধাক্কায় নিহত কেশপুর থানার ধলহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষ্ণপাট গ্রামের বাসিন্দা শোভন মল্লিক ওরফে মিঠুর মর্মান্তিক মৃত্যু হতবাক করে দিয়েছে পহ্রত্যক্ষদর্শীদের। তাঁরা জানিয়েছেন হেলমেট তখনও মাথায় রয়েছে কিন্তু একটু ওপরের দিকে। আর তার তলা দিয়ে দেখা যাচ্ছে একটি চোখ আর কপাল ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। হেলমেট প্রায় অক্ষত।
জানা গেছে দুই সন্তানের পিতা শোভন কৃষ্ণপাট গ্রামে একটি সার এবং কীটনাশক দোকানের মালিক। ব্যবসার কাজেই তিনি সোমবার বেরিয়ে ছিলেন জেলা সদর মেদিনীপুর শহরের উদ্দেশ্যে। ব্যবসায়িক কাজের পাশাপাশি নিজের দোকানের লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয়ে কয়েকটি সরকারি অফিসে তদবির করার কথা ছিল তাঁর। যে কারনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বেরিয়ে ছিলেন তিনি। মেদিনীপুর কেশপুর রাজ্য সড়কের ওপর পাঁচখুরির কাছে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসের সাথে সরাসরি সংঘর্ষ হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আঘাত এতটাই জোরালো ছিল যে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শোভনের। খবর পেয়ে পৌঁছায় পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। শোভনের মেয়ে এবছরই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে। ছেলে ক্লাশ টেনের পড়ুয়া। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে সমগ্র ধলহারা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা জুড়েই।
ট্রাফিক পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। হেলমেট থাকা স্বত্ত্বেও ওনার মৃত্যু হয়েছে বলে জানলাম। যে ছবি দেখছি তাতেও প্ৰথমিক ভাবে সেটাই মনে হচ্ছে। আমরা মানুষের কাছে বারংবার বলেছি শুধু হেলমেট পরলেই হবেনা, সঠিক ভাবে হেলমেট পরতে হবে। অনেকে পুলিশকে ফাঁকি দিতে গিয়ে হাফ হেলমেট পরেন কেউ আবার হেলমেট পরেন কিন্তু গলার বেল্ট বাঁধেন না, অনেকে গলার বেল্ট আলগা করে রাখেন। মনে রাখতে হবে সঠিক পদ্ধতিতে, সঠিক হেলমেট না পরা আর হেলমেট না পরা একই ব্যাপার। এখানে ঠিক কী হয়েছে তা এখুনি বলতে পারছিনা তবে কোথাও তো একটা গলদ ছিলই।