অশ্লেষা চৌধুরী: ভাঙ্গণ প্রাক্কালে ফের শক্তি বাড়ল রাজ্যের শাসক শিবিরের। তৃণমূলে যোগ দিলেন বাজপেয়ী জমানার অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা। শনিবার ডেরেক-সুব্রতদের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিলেন তিনি। তাঁকে দলে স্বাগত জানান উপস্থিত সকলে।
শাসক শিবিরে যোগ দিয়েই মোদি সরকারের উদ্দেশ্যে যেন কামান দাগলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাজপেয়ী জমানার বিজেপি আর এখনকার বিজেপি-র মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ রয়েছে। বাজপেয়ী কখনও ভেদাভেদ করতেন না। কিন্তু, মোদী সরকার স্বেচ্ছাচারী। এদের লক্ষ্য যেনতেন প্রকারে ভোটে জেতা।” “কৃষকদের নিয়ে কোনও মাথা ব্যথা নেই। দিল্লির বুকে তাঁরা বসে আছেন। দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠান দুর্বল। শিক্ষা স্বাস্থ্য সব ক্ষেত্র দুর্দিনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যেনতেন প্রকারেণ ভোটে যেতাই এখন বিজপির লক্ষ্য।” যোগ করেন তিনি।
তিনি এও বলেন, “বাংলাই আগামীদিনের পথপ্রদর্শক হবে। এই বিধানসভা নির্বাচন কেবলমাত্র বাংলার জন্যই নয়, ২০২৪ সালের সরকার পরিবর্তনের লক্ষ্যেও বড় ভূমিকা পালন করবে। তাই দূর থেকে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকতেই তৃণমূলে যোগদান।“ নিজের সীমিত ক্ষমতা দিয়ে মমতাকে বিজয়ী করার লক্ষ্য নিয়ে তিনি লড়াই করবেন বলেও জানান এদিন।
সেইসাথেই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “এই যোগদান ছাড়াও আজ বিশেষ দিন। আজ ডেরেক ও’ব্রায়েনের জন্মদিন। প্রজাতন্ত্রের মানে ৫ বছর অন্তর শুধু ভোট দেওয়া নয়, এর অর্থ দিনের সর্বক্ষণ সরকার মানুষের কাজ করবে, একথাও এদিন বুঝিয়ে দেন তিনি।
তাঁকে স্বাগত জানিয়ে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যতবার কঠিন পরিস্থিতি এসেছে ততবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। আজও ৪৫ মিনিট কথা হয়েছে তাঁদের। যশবন্ত সিনহার তৃণমূলে যোগদান ইতিবাচক হবে।‘
পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের দলে একজন মমতা যেমন আছেন, তেমন যশবন্ত সিন্হা এলেন। তৃণমূলে যোগ দিলেন যশবন্ত সিনহা। আমরা গর্বিত। তিনি শুধু বিহারের মানুষ না। তৃণমূল কংগ্রেসের পথ প্রদর্শক হিসেবে থাকবেন। জ্ঞান-বুদ্ধির পাশাপাশি ওর বিনম্রতা আমাদের ভাল লাগে। আজ গৌরবময় দিনের একটি।“ পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন নন্দীগ্রামে, তাই এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারলেন না বলেও আক্ষেপ করেন সুব্রত।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের আগে থেকেই শাসক শিবির ছেড়ে একের পর এক নেতা মন্ত্রীরা যোগ দিচ্ছেন গেরুয়া শিবিরে। সেই ভাঙ্গন আরও জোরদার হয় তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর। সেই মুহূর্তে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা অটল বাজপেয়ীর জামানার অর্থমন্ত্রী।