নিজস্ব সংবাদদাতা: এবার শুভেন্দুর হয়ে গ্রামে গ্রামে জোট বাঁধছেন মহিলা ব্রিগেড। দিঘা, শংকরপুর, খেজুরি, নন্দীগ্রাম মায় হলদিয়াতেও এখুনি আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে এই ব্রিগেড। ধিরে ধিরে অন্য জায়গাতেও। সামনে বিধানসভা নির্বাচন, লড়াই তাই ‘তুমি চল ডালে ডালে তো আমি চলি পাতায় পাতায়।’ গত ১ বছর ধরেই রাস্তায় নেমেছে শুভেন্দু ব্রিগেড। ‘আমরা দাদার অনুগামী’ কিংবা ‘জননেতা শুভেন্দু অধিকারী’ সহ আরও একাধিক নামে ফেসবুক পেজ খুলে শুরু হয়েছে সেই প্রচার। এরপর শুরু হয়েছে ময়দানে নামা। দাদার ব্যাচ বুকে নিয়েই আর্তের ত্রাণ থেকে বিভিন্ন মনীষার স্মরণে সামিল হয়েছে মন্ত্রীর যুব ব্রিগেড। পাশাপাশি খোলা হয়েছে হোয়াটস আ্যপ গ্রুপ।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলের বেশ কিছু গাঁওতা বা ক্লাব মন্ত্রীর অনুগামী হিসাবে কাজ করছে। সব মিলিয়ে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর এই নিজস্ব যুব সংগঠন চাপে ফেলেছে তাঁরই দল বিশেষ করে অভিষেক ব্যানার্জী ও তাঁর অনুগামীদের। একসময় রাজ্যের যুব সংগঠনের সভাপতি ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই আধিপত্য বিনাশ করার জন্য পৃথক যুব সংগঠন গড়া হয়েছিল অভিষেক ব্যানার্জীর নামে যার নাম ছিল তৃনমূল যুবা। পরবর্তী কালে শুভেন্দুকে যুব থেকে সরিয়ে যুব কংগ্রেসের দায়িত্বে আসেন অভিষেক তখন তৃনমূল যুবার অস্তিত্ব বিলোপ করা হয়।
তারপরেও যুব তৃণমূলের রন্ধ্রে রন্ধ্রে শুভেন্দুর উপস্থিতি। বিভিন্ন জেলার যুব সভাপতিতে ব্যাপক রদবদল। সরিয়ে দেওয়া হয় পূর্ব মেদিনীপুরের যুব সভাপতি ডঃ সংগ্রামজিৎ দলুই কে। এরই পাশাপাশি এখন তৈরি হয়েছে ‘যুবশক্তি’, অভিনেতা সোহমকে মাথায় রেখে। দলের নিজস্ব যুব সংগঠন থাকা স্বত্ত্বেও ঠিক সেই আগের ‘তৃনমূল যুবা’র মতই দলেরই সমান্তরাল সংগঠন কেবলমাত্র শুভেন্দু ভীতির কারনেই কী?
যাইহোক শুভেন্দুর যুবশক্তির কাউন্টার পার্ট খোলার পরপরই এবার শুভেন্দুর হয়ে নতুন মহিলা শক্তিকে লক্ষ্য করা গেল শঙ্করপুরে। হাতে মন্ত্রীর পোস্টার নিয়ে শত শত মহিলাকে দেখা গেল শুভেন্দু অধিকারীকে অভিনন্দন জানাতে। রবিবার শঙ্করপুরের আশে পাশের ২০/২৫টি কয়েকশ গ্রামের মহিলাকে দেখা গেল সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে মন্ত্রী শুভেন্দু আধিকারীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে গিয়ে জানিয়েছেন,”যে ভাবে মন্ত্রীর উদ্যোগে আমাদের এখানে স্থায়ী সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রথম আমরা পূর্ণিমা আর অমাবস্যার কোটালে কোলে বাচ্চা নিয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারব।”
উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই বড় বড় কালো পাথর পড়েছে সমুদ্র বরাবর। শুরু হয়েছে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ। এলাকার প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক স্বদেশ নায়ক জানিয়েছেন, “বারংবার বর্তমান তৃনমূল বিধায়ক অখিল গিরিকে আবেদন করেছি বাঁধের জন্য। কিন্তু কাজ হয়নি। এরপর মন্ত্রীকে বলাতেই উনি কাজ শুরু করেছেন। তাই এলাকার মহিলারা ধন্যবাদ জানাচ্ছেন মন্ত্রীকে।” বলাবাহুল্য এই মহিলারা যে কেবল তৃনমূল পরিবারের নয়, সিপিএম পরিবার থেকেও এসেছিলেন।
এভাবেই শুধু শংকরপুর নয়, খেজুরি, নন্দীগ্রাম, হলদিয়া সহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় যেখানে যেখানে আমফান বিদ্ধস্ত গ্রামবাসীদের কাছে গিয়ে মন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে নিজে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন সেই সব এলাকা গুলিতেও মহিলারা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাবেন বলে জানা গেছে। ঠিক একই ভাবে জঙ্গলমহলের গ্রামে গ্রামে সংগঠিত কিছু নারী বাহিনী নাকি প্রস্তুত হচ্ছেন জঙ্গলে শান্তি ফিরিয়ে আনার ‘নায়ক’ শুভেন্দু আধিকারীকে সম্মান জানাতে। ফের ব্যানার ঝুলবে ‘জঙ্গলমহলের মুক্তি সূর্য’নামে যেমনটা ২০১১তে দেখা যেত। যেমন মহিলাদের হাতে পোষ্টারের পাশাপাশি ব্যানার ফ্লেক্স দেখা গেছে শংকরপুরেও। এবার বিধানসভার আগেই তাই আরও অনেক কিছু চমকের অপেক্ষায় থাকতেই হচ্ছে শুভেন্দু বিরোধী বাহিনীকে।