নিজস্ব সংবাদদাতা : মর্মান্তিক ও ভয়াবহ ঘটনার স্বাক্ষী রইল খড়গপুর গ্রামীন থানার হোলির দুপুরের এক গ্রাম। গ্রামের মানুষরা যখন হোলি খেলায় ব্যস্ত তখন স্ত্রীকে কুড়ুল দিয়ে খুন করল এক ব্যাক্তি। ঘটনার পরই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন স্বামী। যুগপৎ দু’দুটি মৃত্যুর ঘটনায় হোলি খেলার আনন্দ মুহুর্তে বিষাদে পরিনত হল খড়্গপুর গ্রামীণের কৃষ্ণনগর গ্রামে।
পুলিশ জানিয়েছে মৃতরা হল ঝুমা দে (৪৫), তাঁর স্বামী ভরত (৫০)।৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া কৃষ্ণনগর গ্রামের ওই দম্পতিরতাঁদের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঝুমার ঘাড়ে ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। অন্য দিকে বাড়ির ভিতর থেকে গলায় দড়ির ফাঁসে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় ভরত।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন , দীর্ঘদিন ধরে ভরত মানসিক অসুস্থ ছিলেন। তাঁর চিকিৎসাও চলছে। মাঝে মধ্যেই ঝুমাকে খুন করার হুমকি দিচ্ছিলেন তিনি। কয়েকদিন আগে বাজার থেকে ছুরিও কিনে এনেছিল ভরত। যা জানার পরই তাঁদের ছেলে ছুরি সরিয়ে রাখে। দম্পতির একমাত্র ছেলে অমিত। অমিত বিবাহিত। অমিতের স্ত্রীকেও দু’একবার লাঞ্ছনার সম্মুখীন হতে হয়েছে শ্বশুরের হাতে। সোমবার দুপুরে রান্নাঘরে রান্নার যোগাড় করছিলেন ঝুমা। সেই সময়েই পিছন থেকে কুড়ুল নিয়ে এসে হঠাৎ ঝুমার ওপর চড়াও হন ভরত। ঘাড়ে পর পর কয়েকটি কোপ পড়তেই রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে ছুটে বেরিয়ে আসেন ঝুমা।
গ্রামবাসীদের বিষয়টি জানিয়েই লুটিয়ে পড়েন তিনি। বাড়ির উঠোনেই কিছুক্ষনের মধ্যেই ঝুমার মৃত্যু হয়। ঝুমাকে কুপিয়েই কুড়ুল নিয়ে ঘরে ঢুকে যায় ভরত। গ্রামবাসীরা জড়ো হলেও হাতে কুড়ুল থাকায় কেউ ঘরের দিকে যাওয়ার সাহস পায়নি। অমিত সেই সময় গ্রামের পেছনে ইটভাটায় কর্মব্যস্ত ছিল। খবর পেয়ে সেও ছুটে আসে। পরিস্থিতি দেখে ঘরে ঢুকতে সাহস করেনি সেও। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
পুলিশ ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। কিছুক্ষন ডাকাডাকির পরও ভরতের কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের একটি অংশ দিয়ে উঁকি মেরে দেখা যায় গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে ভরত। এরপরই দরজা ভেঙে উদ্ধার করা হয় তার দেহ। পুলিশের দাবি, স্ত্রীকে খুনের পরে অপরাধবোধ থেকে ভরত আত্মঘাতী হয়েছেন।