নিজস্ব সংবাদদাতা: কে বলবে এখন ভরা বর্ষার কাল? তীব্র ভ্যাপসা গরমে ওষ্ঠাগত প্রান। ভারি আর্দ্রতায় চ্যাটচ্যাট করছে শরীর, ঘামছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। সন্ধ্যার পর অবস্থা আরও সঙ্গিন হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি সহনীয় হতে হতে রাত তিনটে, সকাল ৮টা অবধি একটু স্বাভাবিক তারপর আবার যেই কি সেই। এভাবেই চলছে গত প্রায় চারদিন। বর্ষার বৃষ্টি একেবারে উধাও হয়ে গিয়েছে খড়গপুর মেদিনীপুর সহ সারা দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি থেকেই। মাঝেমধ্যে কালো মেঘ দেখা গেলেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না একেবারেই। সরকারি ভাবে তাপপ্রবাহের ঘোষণা করা না হলেও। এই ক’দিন চড়া রোদের সঙ্গে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি চূড়ান্ত জায়গায় পৌঁছেছে দুই শহরেই।
মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া উদ্যান কিংবা আইআইটি খড়গপুরের ক্যাম্পাস ওয়েদার রিপোর্ট বলছে এই মুহূর্তে মোটামুটি ভাবে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস চলছে। অন্যদিকে সর্ব নিম্ন ২৭ য়ের নিচে নামছেনা। গত বুধবার ১লা জুলাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছুঁয়ে ছিল ৩৭ডিগ্রিরও বেশি। হিসাবে বলছে গত ১৫ বছরে মধ্যে জুলাইয়ের উষ্ণতম দিন ছিল ওই বুধবারই। পাশাপাশি বাতাসে জলীয় বাষ্প বেড়েই চলেছে আর পরিণামে গতকাল আর্দ্রতা ৯৮.২%!
এমন পরিস্থিতিতে আশার কথা শোনানো হয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে বৃষ্টি হতে পারে। তবে দুই ২৪ পরগনা,ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
না কথার কথা নয়, বাস্তবেও মেঘ জমাট বাঁধছে দুই শহরের বুক ছড়িয়ে গ্রামীন খড়গপুর ও মেদিনীপুরেও। জমছে জল ভরা মেঘ, সাদা পেঁজা তুলোর পরিবর্তে ঘন কালো মেঘ। শনিবার রোদের তেজ অনেকটাই উধাও। আইআইটির ক্যাম্পাস ওয়েদার রিপোর্ট বলছে শনিবার আকাশে বর্জ্যগর্ভ মেঘের সঞ্চার হয়েছে যার থেকে বাজ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৫০%। বলা বাহুল্য এধরেনর মেঘই বৃষ্টির আদর্শ। শনিবার দুপুরে দক্ষিনপূর্ব কোন থেকে খড়গপুর এলাকায় বাতাস বয়েছিল ৩কিলোমিটার বেগে কিন্তু বিকাল ৪টা থেকে বাতাসের দিক ঘুরে যেমন পূবালি হয়েছে তেমনি গতি বেড়ে হয়েছে ১১ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় যা কিনা বর্ষারই ইঙ্গিত। সব মিলিয়ে শনিবার মৃদু আকারে বৃষ্টি হলেও রবিবার ভারি বর্ষায় শীতল হতে পারে খড়গপুর ও মেদিনীপুর সহ দক্ষিনবঙ্গ।
হাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, মৌসুমী অক্ষরেখা অতি সক্রিয় হওয়ার প্রভাবে দক্ষিণা বাতাসে ভর করে বঙ্গোপসাগর থেকে প্রচুর জলীয়বাষ্প ঢুকেছে। অতি ভারী বৃষ্টি হবে সিকিম ও উত্তরবঙ্গে। দক্ষিণবঙ্গেও রবিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা। বিক্ষিপ্তভাবে কয়েক জায়গায় দু-এক পশলা মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার থেকেই দুই মেদিনীপুর, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বর্ধমানের মত পশ্চিমের জেলাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে চলেছে।
অন্যদিকে হাওয়া অফিস জানিয়েছে, বর্ষা স্বমেজাজেই রয়েছে উত্তরবঙ্গে। মৌসুমি অক্ষরেখা উত্তরবঙ্গের উপর দিয়ে বিস্তৃত হওয়ায় বৃষ্টি হচ্ছে। বহু জায়গাতেই নদীর জল বাড়ছে।