Homeএখন খবরআমফান বিধ্বস্ত কলকাতায় এবার মেরে বিধায়কের মুখ ফাটিয়ে দিল জনতা, নেই কোনও...

আমফান বিধ্বস্ত কলকাতায় এবার মেরে বিধায়কের মুখ ফাটিয়ে দিল জনতা, নেই কোনও গ্রেপ্তার

নিজস্ব সংবাদদাতা: এই প্রথম কোনও জন প্রতিনিধি জনতার হাতে প্রহৃত হলেন। উত্তেজিত ও ক্ষুব্ধ জনতার মারে মুখ ফাটল শাসকদলের বিধায়কের। খোদ কলকাতার বুকেই ঘটনাটি ঘটেছে মেটিয়াবুরুজ এলাকায়। আহত ওই বিধায়ককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ঘটনায় এখনও অবধি কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। জানা গেছে কলকাতার বিভিন্ন অংশের মতই সাতদিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার পর ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। এরপর মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে নাদিয়াল থানার মেটিয়াবুরুজের বদরতলায় বাঁশ বেঁধে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল স্থানীয় জনতা।

পরিস্থিতি সামাল দিতে তৃণমূল বিধায়ক আবদুল খালেক মোল্লা সেখানে পৌঁছতেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। মোল্লা প্রথমে জনতাকে শান্ত হতে বলেন কিন্তু ক্রমশ পরিনতি গড়ায় বচসা এবং তারপর হাতাহাতিতে। এরপরই উত্তেজিত জনতার মারে মুখ ফেটে যায় বর্ষীয়ান বিধায়কের। দ্রুত তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সিএমআরআই হাসপাতালে।

ঘটনাটি ঘটেছে বিকেল পাঁচটা নাগাদ। বিক্ষোভ প্রত্যাহার করানোর জন্য বদরতলায় মোল্লা পৌঁছে জনতাকে শান্ত হওয়ার কথা বলতেই ফুঁসে ওঠে জনতা। তাঁদের বক্তব্য , বারবার বলা সত্ত্বেও আসেনি ইলেকট্রিক সাপ্লাইয়ের গাড়ি। সাত দিন ধরে বিধায়ককেও দেখা যায়নি। শুরু হয়ে যায় গালিগালাজ। উত্তেজনা বাড়ছে দেখে ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে আসছিলেন বিধায়ক। কিন্তু তারপরেও গালিগালাজ হচ্ছে শুনে দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। প্রতিবাদ করতেই বিক্ষোভরত জনতা মারতে শুরু করে তাঁকে।।                                                   খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ডিসি পোর্টের নেতৃত্বে বিরাট বাহিনী। রাত ন’টা পর্যন্ত খবর, কারেন্ট আসেনি ওই এলাকায়। ওই এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিরাট পুলিশ বাহিনী। বিধায়ককে পেটানোর ঘটনায় রাত পর্যন্ত কারও গ্রেফতারের খবর নেই। সিএমআরআইয়ের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত মেটিয়াবুরুজের বিধায়ককে। তাঁর সিটি স্ক্যান ও চেস্ট এক্সরে হয়েছে। তিনি ভাল আছেন বলেই জানা গেছে।

ঘটনা এটাই যে সারা কলকাতা জুড়েই শুধু নয় উত্তর ও দক্ষিন ২৪পরগনা, হুগলি, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে একই অবস্থা। আমফানে পর থেকে বিদ্যুৎসংযোগ না থাকা এবং পানীয় জলের অভাবে শহর, শহরতলির অবস্থা সংকটজনক। অনেকের বক্তব্য, সুপার সাইক্লোন আমফান নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রস্তুতির অভাবেই এই বিপর্যয়ের ছবি প্রকট হয়েছে। ঝড়ের ব্যাপারে নবান্নের সম্যক ধারণাই ছিল না। শুধু বিরোধীরা নন। তৃণমূলের মন্ত্রী তথা মানিকতলার বিধায়ক সাধন পাণ্ডে পর্যন্ত পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে সমালোচনা করে মঙ্গলবার বলেছেন, কলকাতা কর্পোরেশনের কোনও পরিকল্পনাই ছিল না। তাই এই হাল।

ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় নাগরিক বিক্ষোভে পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে। ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ নাগরিকদের উপর দমনপীড়ন নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে বিপুল। যাদবপুরের মতো কিছু জায়গায় অবরোধ তুলতে শাসকদলের কর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার অভিযোগও উঠেছে। কিন্তু মেটিয়াবুরুজ সব কিছুকে ছাপিয়ে গেল। মার খেতে হল শাসকদলের বিধায়ককে। যদিও ঘটনায় এখনও অবধি কেন কেউ গ্রেপ্তার হলনা নাকি জনরোষ বাড়ার ভয়েই কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছেনা তাই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

RELATED ARTICLES

Most Popular