নিজস্ব সংবাদদাতা: শনিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম লাগোয়া হলদি নদীতে ট্রলার ডুবে ১ জন মৎসজীবীর মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৩জন মৎসজীবী। ঘটনার প্রায় ১৪ ঘন্টা পরেও ওই তিনজনের কোনও খোঁজ না পাওয়ায় মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন সহকর্মীরা। নিখোঁজদের সন্ধানে হুভারক্রাফ্ট নিয়ে নদী থেকে মোহনায় জোর তল্লাশি চালাচ্ছেন উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা। এলাকায় গিয়ে পৌঁছেছেন পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা। তল্লাশি অভিযানে তদারকির করছেন তাঁরা।
স্থানীয় কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা তৃনমূল নেতা সেক শাহাবুদ্দিন বলেন, জানা গিয়েছে সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য মা করুণাময়ী নামের ওই ট্রলারটি শনিবার রাত ১০টা নাগাদ রওনা হয়েছিল এই গঙ্গামেলা ঘাট থেকেই কিন্তু বিপদ অনুধাবন করেই কিছুক্ষনের মধ্যেই ফিরে আসে। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ট্রলারটি ফিরে আসে কারন সারেঙ সহ মোট ১৪ জন মৎস্যজীবী সিদ্ধান্ত নেয় খাওয়া দাওয়ার পাশাপাশি আরও পানীয় জল নিয়ে পরে রওনা দেওয়া হবে। সেই লক্ষ্যে ঘাটে ফিরে নোঙর করার সময় দুর্ঘটনা বশত ট্রলারটি ডুবতে শুরু করে।”
জানা গেছে ৯জন সাঁতরে পাড়ে উঠতে সক্ষম হলেও প্রথমে ৫ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। রবিবার ভোর চারটা নাগাদ ডুবন্ত ট্রলারে তল্লাশি চালিয়ে স্থানীয়রা ২জনকে উদ্ধার করে যার মধ্যে ১জন মৃত, অন্য জন নন্দীগ্রাম সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে উদ্ধার হওয়া মৃত মৎসজীবীর নাম প্রদীপ মান্না। প্রদীপ চালাচ্ছিলেন ট্রলারটি। বছর পঁয়তাল্লিশের প্রদীপের বাড়ি কাঁথির মশাগাঁ গ্রামে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন কাশিরাম শিট, অবিনাশ খামারি ও নন্দদুলাল ভূঁইয়া।
ঘটনার খবর পেয়েই রবিবার সকালে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট কিশোর বিশ্বাস, বিডিও সুমিতা সেনগুপ্ত সহ নন্দীগ্রাম থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। উদ্ধারকাজের জন্য হলদিয়া উপকূল রক্ষী বাহিনী এবং এনডিআরএফ টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে জেলা প্রশাসন। নন্দীগ্রাম ১ বিডিও সুমিতা সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, উপকূল রক্ষীবাহিনী জলপথে হুভারক্রাফট ও আকাশপথে ডরনিয়ার এয়ারক্র্যাফট দিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে নিখোঁজদের সন্ধানে। পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী NDRF রওনা দিয়েছে ঘটনাস্থলের দিকে।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ওই ১৪জন মৎসজীবীর একজন বাবলু বর্মন জানিয়েছেন, “নদীতে ভাটার টান ও এবং পূবালি বাতাসের দাপট দুই-ই প্রবল ছিল। যে কারনে আমরা রওনা হয়েও ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেই। পাড়ের কাছে এসে মাটিতে নোঙর ফেলার পর পিছিয়ে আসছিল। আমি নিজেই নোঙরের কাছি ধরেছিলাম। ট্রলার দক্ষিণ-পশ্চিম মুখো হতেই কাত হয়ে ডুবতে শুরু করে এবং কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটনাটি ঘটে যায়।”