চলছে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা: এক তরুন ব্যবসায়ীকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়নগড় থানা এলাকা। পুলিশ কুকুর নিয়ে এসে দুস্কৃতিদের খোঁজে তল্লাশির দাবিতে মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভের মুখে নারায়নগড় থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিককে তুমুল হেনস্থা করল মানুষ। বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে পারুলদা এলাকাতে। ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন পুলিশের পদাধিকারীরা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনাস্থল নারায়নগড় ব্লক এলাকার কুনারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পারুলদা। স্থানীয় গ্রামপঞ্চায়েত ও সংশ্লিষ্ট সংসদের পঞ্চায়েত সদস্য চন্দন দাস বলেন, ‘মধ্য তিরিশের এই তরুন ব্যবসায়ী গৌতম দে ও সুদর্শন অত্যন্ত নিরীহ ও সহজ সরল মানুষ। নারায়নগড় হাটে আলু ও পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসা করেন। সপ্তাহান্তে বৃহস্পতিবার বসে সেই হাট। এবং খুব ভোরবেলা এখানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কেনাকাটা করেন। বাড়ি থেকে ১০কিলোমিটার দুরত্বে সেই হাটে যাওয়ার উদ্দেশ্য লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ভোর চারটে নাগাদ গৌতম পারুলদার বাড়ি থেকে বাইক নিয়ে বেরিয়েছিল।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এরপর বাড়ি থেকে ৫কিলোমিটার দুরে মূলরাস্তা থেকে অনেকটা ভেতরে বাঘুই সেচ খালের ওপর একটি পলাশ গাছে তাঁকে ঝুলে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয় তেগাড়া, ডাকিপাড়ার মানুষ জন চাষের কাজে ভোর বেলায় মাঠে এসে তাঁকে এই অবস্থায় দেখতে পান।”
এই অবস্থায় মেলে গৌতম ওরফে সুদর্শনকে |
পঞ্চায়েত সদস্য চন্দন দাস আরও বলেন, অত্যন্ত নিরীহ ও নির্বিবাদী মানুষ ছিলেন ওই তরুন। অন্য কোনও শত্রুতা তাঁর ছিলনা আর বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে বেরিয়ে কেউ আত্মহত্যা করবে এমনটা বিশ্বাস করিনা। এটা খুনই এবং খুনিরা জানত ওই সময় টাকা নিয়ে গৌতম যায়। তাই ফাঁদ পেতে মারা হয়েছে গৌতমকে। শ্বাসরোধ করে খুন করার পর তাঁকে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ভোর বেলায় এই মৃত্যুর খবর পেয়েই কাতারে কাতারে মানুষ ছুটে আসে পারুলদা ও সংলগ্ন গ্রামগুলি থেকে। ঘটনা দেখে হতবাক হয়ে যায়। তপন আদিত্য নামে এক পারুলদাবাসী ব্যক্তি জানান, ‘আমরা খবর পেয়েই ফোন করি নারায়নগড় থানায়। থানার বড়বাবু ফোন ধরেই বলেন ওটা আত্মহত্যার ঘটনা। থানায় বসে ঘটনাস্থলে না এসেই একজন পুলিশ আধিকারিক কি করে বলেন এটা খুন নয়, আত্মহত্যা? আমরা জানি গৌতম যাঁর পোশাকি নাম সুদর্শন সে আড়াইলক্ষ টাকা নিয়ে বেরিয়েছিল। কোথায় সেই টাকা ? আত্মহত্যা হলে কেন টাকাটা কে নিয়ে গেল?”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
অজাতশত্রু ও মাত্র বছর কয়েকের বিবাহিত এক শিশু সন্তানের পিতা গৌতমের এই পরিনতিতে ফুঁসে ওঠে জনতা। প্রথমে পুলিশের একটি দল আসলে জনতা তাঁদের মৃতদেহ তুলতে বাধা দেয়। খবর পেয়ে সকাল ১০টার কিছু পরে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছান নারায়নগড় থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রনব সেনাপতি। তাঁকে দেখামাত্র ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা। ‘চোর’, ‘ঘুষখোর’ বলে চিৎকার করতে থাকেন জনতা। শুরু হয়ে যায় তাঁকে ঠেলাঠেলি। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমসিম খেতে হয় গুটিকয়েক পুলিশ কর্মীকে। স্থানীয় শাসক দলের নেতৃত্ব অনেক কষ্টে সামাল দেয় জনতাকে। এখনও মৃতদেহ ফেলে বিক্ষোভ অব্যহত রয়েছে।