নিজস্ব সংবাদদাতা: ভয়ংকর গতিতে থাকা একটি লরি কর্তব্যরত এক কর্মী সমেত উড়িয়ে নিয়ে চলে গেল টোলপ্লাজার গেট! শনিবার রাতে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এই দানবীয় কান্ডে এখনও থরথর করে কাঁপছে প্রত্যক্ষদর্শী মৃত যুবকের সহকর্মীরা। গাড়িটি এতটাই দুরন্ত গতিতে ছিল যে তার হদিসই করতে পারেনি টোলপ্লাজার কর্মীরা।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
আরও মারাত্মক এই যে দুর্ঘটনা যে এলাকায় হয়েছে, টোল প্লাজা থেকে মাত্র কয়েক ফুট দুরে অথচ তা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় ছিলনা বলেই দাবি করেছেন কর্মীদের একাংশ। ফলে ঘাতক লরির হাল হাকিকৎ জানার উপায় নেই। জাতীয় সড়কের ওপর এরকমই ঢিলে ঢালা পরিবেশে মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় টোলপ্লাজার কর্মীদের।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্তর্গত বালেশ্বর-রানীগঞ্জ ৬০নম্বর জাতীয় সড়কের নারায়নগড় থানার অংশে মকরামপুর টোলপ্লাজায়। সন্ধ্যার পর টোলপ্লাজার দক্ষিন অংশে প্লাজা থেকে বেশ কিছুটা সামনে কর্তব্যরত ছিল বছর ৩৫য়ের সঞ্জয় খিলাড়ি। এই সময় খড়গপুর মুখি একটি ভারি লরি আসছিল। লরিটি প্রচণ্ড দ্রুত গতিতে থাকায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সঞ্জয় সামনেই প্লাজা আছে এই ইঙ্গিত করে গতি কমানোর নির্দেশ দেয় কিন্তু বেপরোয়া লরিটি সেই নির্দেশ মানার পরিবর্তে তাকে শুদ্ধ ধাক্কা মেরে উড়িয়ে নিয়ে প্লাজার বুম, ব্যারিকেড ভেঙে গুঁড়িয়ে দুরন্ত গতিতে বেরিয়ে যায়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনার আকস্মিকতায় এবং সঞ্জয়ের প্রান বাঁচানো ব্যস্ত সহকর্মীরা পুলিশকে দ্রুত খবর দিতেই ভুলে যায়। ঘাতক গাড়ি তাই অবলীলায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। টোলপ্লাজার কর্মীদের দাবি দুর্ঘটনাস্থল সিসিটিভি ক্যামেরার আওতার বাইরে ছিল আর লরিটি এতই দুরন্ত গতিতে ছিল যে প্লাজার অংশ ভেঙে যাওয়ার সময়ও তা স্পষ্ট করে ধরা পড়েনি।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এদিকে দুর্ঘটনার পরই সঞ্জয়কে নিয়ে তার সহকর্মীরা তাকে নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যায় কিন্তু সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে দেখে তাঁকে পাশের রাজ্য কটকে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেয় যদিও পথি মধ্যেই মৃত্যু হয় সঞ্জয়ের। গোটা ঘটনায় ভেঙে পড়েছে গত ৭ বছর ধরে এই টোলপ্লাজাতে কর্মরত নারায়নগড়ের বাড়গোপালের বাসিন্দা সঞ্জয়ের পরিবার। মাত্র কয়েকবছর আগেই টোলপ্লাজা থেকে অনতিদুরেই ডাউকা বলে একটি গ্রামে বিয়ে করেছিল সঞ্জয়। শোক ছড়িয়ে পড়েছে সেই গ্রামেও।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
ঘটনায় টোল কর্তৃপক্ষর বিরুদ্ধেও গাফিলতির চরম অভিযোগ উঠে আসছে। রাত্রি বেলায় টোলপ্লাজা সংলগ্ন রাস্তায় যারা কর্তব্যরত থাকবে তাদের মাথায় হেলমেট, শরীরে ফ্লুওরুসেন্ট জ্যাকেট ও পায়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্যু থাকা উচিৎ। প্লাজার কর্মীদের সুত্রে জানা গেছে তাঁদের টুপি, শ্যু ও জ্যাকেট দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু সেগুলো কর্মীরা ব্যবহার করেনা। ঘটনার সময় সঞ্জয় ফ্লুওরুসেন্ট জ্যাকেট পরে ছিলনা। নিয়ম অনুযায়ি ওই পোশাক না পরে ডিউটি করলে টোল কর্তৃপক্ষর উচিৎ তাকে সতর্ক ও ফাইন করা। নিশ্চিতভাবে কর্তৃপক্ষ এই ‘সেফটি সিকিউরিটি মেজর’ মেনে চলেনি। পুলিশ দুর্ঘটনার তদন্তের পাশাপাশি নিরপত্তার বিষয়গুলিও দেখছে বলে জানা গেছে।