ওয়েব ডেস্ক : কয়েক সপ্তাহ আগে এই বুধবারেই বাংলা ও ওড়িশার বুকে কার্যত ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল সুপার সাইক্লোন ‘আমফান’। সেই ক্ষত বাংলার মানুষের কাছে এখনও দগদগে। আজ ফের এক বুধবার। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পশ্চিম উপকূলে আছড়ে পড়তে চলেছে ‘নিসর্গ’। আবহাওয়া দফতর বলছে, দুপুরের মধ্যেই মুম্বইয়ের আলিবাগে ল্যান্ডফল হতে চলেছে। আছড়ে পরার সময় গতিবেগ থাকবে ১১০-১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আলিবাগ থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সুপার সাইক্লোনটি। আর মু্ম্বই থেকে এর দূরত্ব মাত্র ১৯০ কিলোমিটার। সুরাট থেকে এটি প্রায় ৪১০ কিলামিটার দূরে রয়েছে। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, যেহেতু ল্যান্ডফলের সময় নিসর্গের গতিবেগ ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকবে। এর ফলে প্রায় সাড়ে ৬ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷
এনডিআরএফ প্রধান এস এন ঠাকুর জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলার ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের উপকূলবর্তী এলাকায় ৩০টিরও বেশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল তৈরি রাখা হয়েছে। এক একটি দলে ৪৫ জন করে কর্মী রয়েছেন। আরও বেশ কয়েকটি দলকে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রাখা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে তরফের ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ের বাসিন্দাদের বাড়ির ভিতরে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে। সরকারি কাজকর্ম আপাতত মঙ্গলবার থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার মানুষদের ইতিমধ্যেই অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, ঠাকরে সরকারের তরফে ইতিমধ্যেই একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।সেখান থেকেই পরিস্থিতি নজরে রাকগা হচ্ছে।তৈরি রয়েছে সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
অন্যদিকে, ইতিমধ্যেই গুজরাত সরকারের তরফেও ইতিমধ্যে উপকূলবর্তী ৪৭টি গ্রাম থেকে ২০ হাজারের মতো গ্রামবাসীকে সরিয়ে আনা হয়েছে। তৈরি রাখা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
করোনা সংক্রমণের জেরে একেই নাজেহাল মহারাষ্ট্র ও গুজরাট। দেশের রেকর্ড সংক্রমণ সেখানেই। তার ওপর এমন দুর্যোগের জেরে নাজেহাল দুই সরকার। এই পরিস্থিতিতে সামাজিক দুরত্ব মেনে বিপুল পরিমাণ লোককে আশ্রয় দেওয়া একপ্রকার অসম্ভব। অন্যদিকে, সংক্রমণ ছড়ানোরও ভয় রয়েছে।
আমফানের দাপটে বাংলার গায়ে এখনও দগদগে ঘা। নিরাশ্রয় হাজার হাজার পরিবার আর ধ্বংস লীলার স্বাক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক বসত বাড়ি। হাজার হাজার বিঘা জমি চলে গেছে নোনা জলের কবলে যা কবে স্বাভাবিক হবে কেউ জানেনা। কয়েকশ স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইত্যাদির ক্ষতি হয়েছে। প্রায় শতেক মৃত্যু ছুঁয়ে যাওয়া বাংলায় চাষাবাদ, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ইত্যাদি মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ২৫হাজার কোটি টাকা। সেই কথা মাথায় রেখে এই দুই রাজ্য কিছুটা হলেও আগাম সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিতে পারেন কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।