নিজস্ব সংবাদদাতা: ত্রাণের চাল চুরির বদনামে জেরবার তৃণমূল। মূখ্যমন্ত্রী স্বয়ং সতর্ক করেছেন দলের নিচু তলার নেতাদের। খাদ্যমন্ত্রী কড়া অবস্থান নিয়েছেন রেশনের চালে যেন হাত না বসাতে পারে নিজের দলের নেতা কাউন্সিলাররা। অপসারিত হয়েছেন খাদ্য সচিবও। ফলে চাল চুরি বিতর্ক আরও চেপে বসেছে দলের কাঁধে। কাটমানি বিতর্কের পর চাল চুরি বিতর্ক তাই দলের জন্য অনেকটাই অস্বস্তির। এরই মধ্যে এক তৃণমূল নেতার ত্রানের জন্য বরাদ্দ মাছের খাবার চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে ব্যাপক মার খেলেন জনতার হাতে। দক্ষিন ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের ঘটনা।
করোনা মোকাবিলায় গোটা দেশ জুড়ে চলেছে লকডাউন। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের রেশনের ব্যবস্থা করেছেন সরকার। পাশাপাশি পশুপাখিদের জন্যেও বরাদ্দ করা হয়েছে খাদ্যের। আর সেই ত্রাণের খাবার আত্মসাৎ করে বিক্রি করতে গিয়ে গ্রামবাসীরা হাতেনাতে ধরলেন এক তৃনমূল নেতাকে। অভিযোগ, মাছের খাবার চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এই অভিযোগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের দিঘিরপাড় পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা আতিয়ার রহমান সর্দারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয়রা। লকডাউনের মধ্যে এলাকার মাছচাষিদের জন্য , ‘সুন্দরবন উন্নয়ন পর্যদ থেকে এলাকার মৎস্যচাষীদের জন্য কয়েক শ’বস্তা মাছের খাবার ত্রাণ হিসাবে পাঠিয়েছিল সরকার। অভিযোগ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে সেই মাছের খাবার খোলা বাজারে বিক্রি করে দেন আতিয়ার সাহেব।
জানা গেছে, আতিয়ারের স্ত্রী আনজুরা বিবি ক্যানিংয়ের দিঘিরপাড় পঞ্চায়েতের সদস্য। অভিযোগ, বস্তাপ্রতি ২,২০০ টাকায় মাছের খাবার বিক্রির সময় আতিয়ারকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন গ্রামবাসীরা। ঘেরাও করে শুরু হয় বিক্ষোভ। বেধড়ক মারধর করে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবে ক্যানিংয়ের মৎস্য দপ্তরের আধিকারিকের নজর ছাড়া কীকরে কয়েক শো বস্তা খাবার বিক্রি হচ্ছে তা নিয়ে দেখা দিয়েছে প্রশ্ন। ক্যানিং ব্লকের মৎস্য আধিকারিক অরুণ দেব বলেন, ‘খাবারগুলো চুরি করে বিক্রি করা হচ্ছিল। ওগুলো সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ থেকে পাওয়া মাছের খাবার। স্থানীয় মানুষজন এদিন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে বেধড়ক মারধর করে তুলে দেয় পুলিশের হাতে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই নেতাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। শুরু হয়েছে ঘটনার তদন্ত।’
এক বিক্ষোভকারী জানিয়েছেন, গরিব মৎস্যজীবীদের দেওয়ার জন্য যে খাবার সরকারিভাবে দেওয়া হয়েছিল তা ২২০০ টাকা করে প্রতিবস্তা বিক্রি করছিলেন ওই নেতা। আমরা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলি। এবং পুলিশের হাতে তুলে দিই।’ অন্যদিকে চুরি করে মাছের খাবার বিক্রি করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা আতিয়ার রহমান সরদার। তিনি বলেন, ‘চুরি করে তিনি মাছের খাবার বিক্রি করেননি। এলাকার মানুষ মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’
স্থানীয় মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়ে ওই তৃণমূল নেতা সহ আরো দুই অভিযুক্তকে আটক করে ক্যানিং থানার পুলিশ। সামাজিক দূরত্ব না মেনে কয়েক হাজার মানুষ এদিন ওই তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনে চড়াও হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। প্রায় ঘণ্টা খানেক ধরে বিক্ষোভের পর তারপর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। ছবি-প্রতীকি