Homeএখন খবরখড়গপুরে করোনা বিপদ বাড়ছে, শাসকের প্রতিবাদে ভেঙে খান খান লকডাউন বিধি

খড়গপুরে করোনা বিপদ বাড়ছে, শাসকের প্রতিবাদে ভেঙে খান খান লকডাউন বিধি

নিজস্ব সংবাদদাতা: অনেকেরই মাস্ক নেই আর যাদের আছে তাঁদের মাস্ক গলার কাছে নামানো। নেতারাই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে মঞ্চে বসে আর কর্মীরা প্রায় একে অপরের কোলের ওপর বসে। কে বলবে খড়গপুরের এই নেতারাই কয়েকদিন আগে কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছিলেন শহরের উপ পৌরপ্রধান করোনা সংক্রমিত হওয়ার পরই। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর তা থেকে শিক্ষা নিয়েই হয়ত চিকিৎসাধীন থাকা কালীন উপ পৌরপ্রধান সেক হানিফ ভিডিও বার্তায় খড়গপুর বাসীর কাছে আবেদন করেছিলেন, সবাই মাস্ক পরুন। হানিফের কথা শহরবাসী শুনেছেন কিনা জানা নেই তবে তার দলের নেতা বা কর্মী কেউই যে সে কথায় পাত্তাই দেননি সোমবার তারই স্বাক্ষী থাকল খড়গপুর, সেই খড়গপুর যেখানে প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে এবং ৪৮ ঘন্টা আগেই শহরের সর্বোচ্চ সংক্রমন হয়েছিল একদিনে ৭ জন।

সোমবার সারা রাজ্যের মতই খড়গপুর শহরে পেট্রল ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ইন্দা লোকাল থানা সংলগ্ন পেট্রোলপাম্পে খড়গপুর শহর তৃনমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে একটি প্রতিবাদ সভায় শহরের নেতা থেকে কর্মীদের দেখা গেল করোনা বিধি অতিক্রম করেই প্রতিবাদ সভায় অংশ নিতে। দু’চার হাতে গোনা মানুষ ছাড়া প্রায় সব্বাই হয় মাস্ক বিহীন অথবা গলায় মাস্ক নামিয়েছিলেন। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসেছিলেন মঞ্চ কিংবা মঞ্চের নিচে।

এখনও অবধি হু কিংবা ভারত সরকারের অভিমত এটাই যে মুখ বা নাক নিঃসৃত ড্রপলেটই করোনা সংক্রমনের প্রধান কারন। উপসর্গযুক্ত অথবা উপসর্গহীন ব্যক্তির মুখ নাক দিয়ে ছিটকে আসা শ্লেষ্মা অন্য একজনের শরীরে বা জামা কাপড়ে পড়লে সেই ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। আর তাই মাস্ক পরতে হবে যাতে আমার থেকে অন্য কেউ আক্রান্ত হয়, অনন্ত ২গজ দুরে থাকতে হবে যাতে আমার গায়ের কারও শ্লেষ্মা এসে পড়ার সুযোগ থাকে। অথচ সভায় তার বালাই ছিলনা।

এদিকে খড়গপুরে দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্ত ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবারের করোনা রেজাল্টে দেখা গিয়েছে শহরের উত্তর মধ্য দক্ষিন পূর্ব সমস্ত দিকই গ্রাস করেছে করোনা। প্রতিবাদ সভায় সব জায়গা থেকে কর্মীরা এসেছেন। সামাজিক দূরত্বহীন, মাস্ক না পরা বা পরেও গলায় ঝুলিয়ে রেখে কে কাকে এদিন সংক্রমিত করে গেলেন কে জানবে? অথচ শনিবারই ৭ আক্রান্তের খবর পাওয়ার পরই খড়গপুরের এসডিপিও নিজের ফেসবুকে আরও একবার অনুরোধ করেছেন সবাই মাস্ক পরুন বলে। শুধু তাই নয়, গত কয়েকদিন ধরেই পুলিশ শহরের যথেষ্টই অভিযান চালাচ্ছে। মাস্ক না পরলে, সামাজিক দূরত্বের বিধি না মানলে গ্রেপ্তার, ফাইন করা হচ্ছে অথচ শাসকদলের প্রতিবাদ সভা সেসব ছাড়াই হয়ে গেল! পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখল।

সভায় উপস্থিত বিধায়ক প্রদীপ সরকার, শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পান্ডে, প্রবীন নেতা জহর পাল অনেকেরই হয় মাস্ক নেই অথবা মাস্ক গলায় ঝুলছে যা না থাকার সমান। ১০জন পাশাপাশি বসে থাকলে এবং তার মধ্যে একজন মাস্ক না পরলেই বাকিটা অর্থহীন। অথচ ক’দিন আগেই করোনা আতঙ্কে এরা সবাই কোয়ারেন্টাইনে চলে গেছিলেন।

বিধায়ক প্রদীপ সরকারের বক্তব্য,” সবাইকে বলা হয়েছিল নিয়ম মানতে কিন্তু সবাই না মানলে কি করব? তাছাড়া এত লোক এসেছিলেন যে দেখা মুশকিল কে নিয়ম মানছে আর কে নয়।”
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তুষার মুখার্জীর বক্তব্য, “একই দিনে আমরা শহরের শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিবস পালন করতে চেয়ে পুলিশের অনুমতি চাইলে পুলিশ সামাজিক দূরত্বের অজুহাত দেখায় অথচ শাসকদলের বেলায় সব মাপ।”

RELATED ARTICLES

Most Popular