নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনা, লকডাউন কিংবা আমফান সবকিছুর মধ্যেও বিরতিহীন তৃণমূলের গোষ্টি সংঘর্ষ। এলাকা দখল কিংবা নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা অথবা তোলাবাজি ইত্যাদি নানা কারনে শাসকদলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে জেরবার শাসকদল। বুধবার রাজ্যজুড়ে এরকমই দুটি গোষ্টি সংঘর্ষের ঘটনায় প্রান গিয়েছে২ জনের। এদিন বড়সড় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে দক্ষিন ২৪ পরগনার বাসন্তীতে যেখানে মূল তৃণমূল বনাম যুব তৃণমূল সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন মূল তৃণমূলের কর্মী আমির আলি সর্দার।
উল্লেখ্য পুরো দক্ষিণ ২৪ পরগনা জুড়েই এখন মূল আর যুবর দ্বন্দ্ব চলছে। অভিষেক পন্থী বনাম পুরানো তৃণমূল নেতাদের মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই চলছে গত কয়েক বছর। আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে তা আরও জোরালো। একদিকে সরকারের ত্রান আর অন্যদিকে পুনর্গঠনের জন্য বরাদ্দ কোটি কোটি টাকা আর দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারদের ওপর কার নিয়ন্ত্রন থাকবে মূলত দ্বন্দ্বের উৎস এটাই।
ঠিক সেই কারনেই বুধবার বাসন্তীর ফুল মালঞ্চ থানা অন্তর্গত এলাকা দখলের উদ্দেশে তৃণমূল ও যুব তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় বোমাবাজি চলায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ বুধবার সকালে ফুল মালঞ্চ এলাকার ১১ নম্বর সর্দারপাড়ায় ফের বোমাবাজি শুরু করে যুব তৃণমূল সমর্থকরা। সেই সময় স্থানীয় গু়ড়িয়া বাজারে যাওয়ার জন্য নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তৃণমূল কর্মী আমির আলি সর্দার। পথে নামতেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলি লাগে তাঁর বাঁ পাজরে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রক্তাপ্লুত আমির আলি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান। আমির আলির মৃত্যু ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বাসন্তী থানার পুলিশ। পরে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী। এখনও পর্যন্ত তৃণমূল কর্মী হত্যায় কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে জানা গিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কয়েকটি তাজা দিশি বোমা।
অন্যদিকে অপর ঘটনায় পূর্ব বর্ধমানে গোষ্টি কোন্দলের জেরে এক যুবককে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় বুধবার রাতে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল বর্ধমানের লক্ষ্মীপুর মাঠ এলাকায়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এলাকার এক তৃণমূল নেতার বাড়িতে চলে হামলা। বেধড়ক মারধর করা হয় তৃণমূল নেতাকে। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।
জানা গিয়েছে, এদিন রাতে মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন গৌতম দাস নামে বছর ২৫-এর ওই যুবক। জিটি রোডে ও বাদশাহী রোডের মাঝে কয়েকজন তাঁর পথ আটকায়। সেখানেই বচসায় জড়িয়ে পড়ে তাঁরা। অভিযোগ, তখনই গৌতমকে ব্যাপক মারধর করা হয়। অচৈতন্য অবস্থায় রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে তিনি। এরপরই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এই ঘটনার জেরেই ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয় এলাকায়। যুবককে খুনের ঘটনায় এলাকারই এক তৃণমূল নেতা বিকাশ মণ্ডলের অনুগামীরা জড়িত বলে অভিযোগ তোলে দলেরই একাংশ। ক্ষোভের বশে বিকাশবাবুর বাড়িতে চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। বেধড়ক মারধর করা হয় বিকাশবাবুকে। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে তাঁকে।