নিজস্ব সংবাদদাতা: গলায় মালা পরে মাঝ রাস্তায় বসে রয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা। চিল চিৎকারে পাড়া থুড়ি ফাঁকা রাস্তা মাত করছেন, উত্তেজিত অবস্থায় কিছু অসংস্কৃত ভাষাও ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। এক মিনিট এক সেকেন্ডের সেই এমনই ভিডিও ফুটেজকে ঘিরে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া। ভিডিও দেখে কেউ বলছেন এবার মাটিতেই বসতে হবে সভাধিপতিকে কেউ আবার মজা করে বলছেন, একটা বাটি ধরিয়ে দিলেই হল! কিন্তু কেন এমন হল? তিনি নিজে জানিয়েছেন, নিজের হয়ে প্রচারে নেমে বিরোধী কর্মীদের দ্বারা আক্রান্ত হতে হতে বেঁচে গিয়েছেন। তাই প্রতিবাদ করছিলেন রাস্তায় বসে।
উত্তরা সিংহ হাজরা এবার তৃনমূলের প্রার্থী হয়েছেন গড়বেতা বিধানসভা কেন্দ্রে। গত শনিবার তিনি তাঁর নিজের গড়বেতা কেন্দ্রের দলদলি এলাকায় প্রচারে গিয়ে ছিলেন। শনিবার খড়গপুরে একটি নির্বাচনী জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই জনসভায় পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় সমস্ত বিধানসভা এলাকা থেকেই বিজেপি নেতা কর্মীরা গিয়েছিলেন। সেই জনসভা সেরে খড়্গপুর থেকে গড়বেতা ফিরছিলেন বিজেপির কিছু কর্মী। অভিযোগ, জেলা পরিষদ সভাধিপতি তথা তৃণমূল প্রার্থী তখন নিজের প্রচার সেরে ফিরছিলেন সেই সময় বিজেপির কর্মীরা তৃণমূল প্রার্থীর দিকে একটি লাঠি ছুঁড়ে দেয়। এর পরেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন তৃণমূল প্রার্থী। রাস্তায় বসে পড়েন তিনি। চিৎকার করতে শুরু করেন। তাঁর রাস্তায় বসে পড়ার সেই ঘটনার ৬১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ফুটেজ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। আর তারপরেই ভাইরাল হয়ে যায় সেই ফুটেজ।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে তৃণমূল উত্তরা সিংহ হাজরা বলেন,’শনিবার দলদলিতে সিপিএমের প্রাক্তন হার্মাদ, যারা এখন বিজেপি করছে আমার প্রচার মিছিলে লাঠি, রড ছুঁড়েছিল। আমি নেমে প্রতিবাদ করেছি।’ যদিও হামলার এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে হাজরার প্রতিদ্বন্দ্বী গড়বেতার বিজেপি প্রার্থী মদন রুইদাস বলেছেন, ‘উনিতো শাসক দলের প্রার্থী। উনার সঙ্গে সিকিউরিটি, ক্যামেরা ম্যান আছেন। উনার পরি কেউ কিছু করেছেন এমন ফুটেজ দেখান। প্রচারে লোক পাচ্ছেন না। তাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে দিদির মতো নাটক করছেন। সহানুভুতি পাওয়ার চেষ্টা করছেন।’
গড়বেতার এক সিপিএম নেতা বলছেন, আমাদের মাননীয়া সভাধিপতির ভাইরাল হওয়া ভিডিওর কথা গুলো শুনুন। এটাই ওনার আসল সংস্কৃতি যা কিনা বেকায়দায় পড়ে মুখনিঃসৃত বানীর মত শোনাচ্ছে। উনি ওনার দিদি আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর নকল করার চেষ্টা করে থাকেন। দিদি যখন হুইলচেয়ারে বসে পড়েছেন তখন ওনাকেতো আরও একদম এগিয়ে মাটিতে বসতে হবে। সেটাই করেছেন তিনি। গড়বেতার বাজার এবার খুবই খারাপ। তৃণমূলকে খালি থলে নিয়েই ফিরতে হবে জেনে এখন এই সব করছেন।
উল্লেখ্য ভাইরাল হওয়া এই ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি দ্য খড়গপুর পোষ্টের পক্ষে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছেন তৃনমূল প্রার্থী বলছেন, ‘২৭ তারিখ পর্যন্ত এখানেই বসলাম। দেখি কত দম। …… সম্পত্তি। এই তুলে নিয়ে আয় ……। ইত্যাদি।’ অসহায় তৃনমূল কর্মীরা তাঁকে রাস্তা থেকে তোলার বা নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও সফল হননি বেশ কিছুক্ষণ। পরে অবশ্য তিনি রাস্তা ছেড়ে উঠেছেন। তৃনমূলের পক্ষ থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলা হয়েছে, একজন মহিলা প্রার্থীর প্রচারে যারা এই ভাবে বাধা দেয় তাদের ধিক্কার দেওয়ার ভাষা নেই।