ওয়েব ডেস্ক : গুলি বিদ্ধ অবস্থায় মেঝের দুধারে পড়ে রয়েছে স্বামী-স্ত্রীর দেহ। রক্তে ভেসে গিয়েছে মেঝে। মঙ্গলবার রাতে এমনই ঘটনা ঘটলো উত্তর ২৪ পরগণার হাবড়ায়। মৃত দম্পতির নাম রামকৃষ্ণ মন্ডল ও লিলারাণী মন্ডল। জানা গিয়েছে, মধ্যরাতে বাড়ির ভিতরে ঢুকে এক দম্পতিকে গুলি করে খুন করলো তন্ময় বর নামে এলাকারই এক যুবক। এদিকে আচমকা গুলির শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন স্বামী স্ত্রী৷ ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়৷ ঘটনার পর স্থানীয়দের তরফে দ্রুত পুলিশে খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছে দেহদুটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।
জানা গিয়েছে, হাবড়ার বাড়িতে রামকৃষ্ণবাবু ও তাঁর স্ত্রী থাকতেন। মঙ্গলবার রাত বাড়তেই বেশ কিছুক্ষণ ছাদে আওয়াজ শুনতে পান লিলাদেবী। প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও পরে মনে করেন নিশ্চয় ছাদের দরজা ভেঙে চোর ঢুকেছে৷ এদিকে তন্ময় বর নামে ওই যুবক ততক্ষণে ছাদের দরজা ভেঙে বাড়ির ভিতর ঢুকে পড়েছে। শব্দ শুনে লিলাদেবী ঘরের বাইরে বেরোতেই লিলাদেবীর মাথায় গুলি চালায় ওই যুবক এরপর রামকৃষ্ণবাবুর বুকে পর পর দুটি গুলি চালিয়ে চম্পট দেয় সে। ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। এদিকে গুলির শব্দ পেয়ে ততক্ষণে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে স্থানীয়রা দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন মণ্ডল দম্পতি। এরপর তারা খবর দেন পুলিশে। স্থানীয়দের তরফে অভিযোগ করা হয়, এই ঘটনার সাথে তন্ময় বর জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু কে এই তন্ময় বর? কেনই বা সে খুন করতে গেল ওই দম্পতিকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে রামকৃষ্ণ বাবুর ভাইজিকে উত্যক্ত করতো ওই যুবক। তাকে একাধিকবার বারণ করা সত্ত্বেও সে শোনেনি, বরং দিনের পর দিন সেই মাত্রা ক্রমশ বেড়েছে। এরপর ২০১৮ সালে আচমকা রামকৃষ্ণবাবুর ভাইজিকে অপহরণ করে বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত তন্ময় বর। কিন্তু শেষমেশ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায় তন্ময়। দুবছর জেলও হয় তার। গত মাসেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে সে। কিন্ত যেহেতু রামকৃষ্ণবাবু তার নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, সে কারণে তার মধ্যে একটা প্রতিশোধ স্পৃহা থেকে গিয়েছে৷ স্থানীয়দের অনুমান, সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই মঙ্গলবার রাতে খুনের ছক কষে তন্ময়। ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত তন্ময় বরকে খুঁজে পাওয়া না গেলেও খুব শীঘ্রই অভিযুক্তের খোঁজ চালানো হচ্ছে।