বিশ্বজিৎ দাস: সন্তানের মর্মান্তিক মৃত্যুতে তিনদিন ধরে দেহ আগলে শোকপালন হাতির দলের। হাতির সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। শোকে আকুল দলের বাকি সদস্যরা। হাতির দল টানা তিনদিন ধরে মৃত সন্তানের দেহ আগলে ঠায় দাঁড়িয়ে শোকপালন করল। এই ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির বৈকন্ঠপুর বন বিভাগের গৌরীকোণ এলাকার। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় বনকর্মীদের পোস্ট করা এমন একটি ভিডিও নিমেষে ভাইরাল হয়ে যায়। হাতিদের এই শোকজ্ঞাপনের চিত্র দেখে হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা।
জলপাইগুড়ির তিস্তা নদীর গৌরীকোণ এলাকা। নদীর চরে বাদাম, ভুট্টা চাষ করেন চর এলাকার বাসিন্দারা। প্রতি বছরই সেই শস্য খেতে হাতির পালের হানা প্রায় রুটিনে পরিণত হয়েছে। এ বছরও ব্যতিক্রম হয়নি। নদীর চরে ভুট্টা, বাদাম খেতে একপাল হাতি হানা দেয় গৌরীকোণ এলাকায়। পেটপুরে খাওয়াদাওয়ার পরও হাতির দলকে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। টানা প্রায় দু’দিন এই দৃশ্য চোখে পড়ায় সন্দেহ হয় বনকর্মীদের।
স্পেশ্যাল ড্রাইভ করে হাতির দলটিকে দু’ভাগে ভাগ করে বৈকন্ঠপুর এবং কাঠামবাড়ি জঙ্গলের দিকে সরিয়ে দেওয়া হয় ।হাতির পাল চলে যেতেই ঘাসজমির উপর দেখা যায়, পড়ে রয়েছে এক শাবকের মৃতদেহ। শাবকটি স্ত্রী হাতি। বনকর্মীদের অনুমান, তিনদিন আগে বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে আনুমানিক চার বছর বয়সী স্ত্রী হস্তি শাবকটির।
প্রসঙ্গত, মানুষের মৃত্যুতে পরিজনকে কাঁদতে দেখা যায়। কিন্তু মৃত্যু নিয়ে হাতির দল একটু বেশিই স্পর্শকাতর। দলের কোনও সদস্যের প্রাণহানি ঘটলে, তা বুঝতে পারলে শোকে পাথর হয়ে যায় তারা। প্রিয়জনকে কিছুতেই দল ছেড়ে এভাবে চলে যেতে দিতে পারে না। তাই মৃতদেহ ঘিরে ধরে আগলে রাখার চেষ্টা করে। দেশের বিভিন্ন জায়গায়, যেখানে হাতির বাসস্থান, সেসব জঙ্গলে এই দৃশ্য স্বাভাবিক। কখনও মৃত হাতিদের কবরস্থলে গিয়েও তারা ভিড় করে। সবটাই আসলে তাদের শোকজ্ঞাপন প্রক্রিয়া।