ওয়েব ডেস্ক : জীর্ণ মাটির বাড়ি। বহুদিন ধরে সংস্কার করা হয়নি। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ঘুমের মধ্যেই আচমকা বহুদিনের পুরনো বাড়িটি ভেঙে পড়ে৷ ঘটনায় মাটির বাড়িটি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে বছর ৫২-র সন্তোষ বিশ্বাস ও তাঁর ভাই বিকাশ বিশ্বাস (৪৬)। ঘটনায় ইতিমধ্যেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাবা অনিল বিশ্বাস। জানা গিয়েছে বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ আচমকা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মাটির দোতলা বাড়িটি। সে সময় বাড়িতে বাবা অনিল বিশ্বাস ও দুই ছেলে সহ মোট ৫ জন ছিল। বাড়ির একটা অংশ ভেঙে পড়তেই বড়ো ছেলে সন্তোষ বিপদ বুঝে প্রথমে তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে ঘর থেকে বাইরে বের করে দেন। এরপর দুই ভাই বাবাকে বাঁচাতে গেলে বাড়ির বাকি অংশ তাদের উপর পড়ে চাপা পড়ে যান। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার জয়পুর এলাকায়৷
ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ৮৫-র অনিলবাবু অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষক। তিনি একসময় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিও ছিলেন। তবে তিনি ভালো চাকরি করলেও তাঁর দুই ছেলে তেমন কোনও কাজ করত না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই অনিলবাবুর পেনশনের টাকাতেই চলত পরিবারটি। সেকারণে বহু পুরনো অর্ধেক ভাঙা জীর্ণ মাটির দোতলা বাড়িটি আর সংস্কার করার সামর্থ হয়নি তাঁদের। ফলে এভাবেই দিন কাটছিল বিশ্বাস পরিবারের। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে ঘটে গেল গভীর বিপর্যয়। বাবাকে বাঁচাতে গিয়ে তাদের ওপর ভেঙে পড়ে বাড়ির বাকি অংশ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই ভাইয়ের।
এদিকে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আচমকা শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। স্থানীয়রাই প্রথমে তাঁদের উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে সাফল্য না মেলায় শেষ পর্যন্ত খবর দেওয়া হয় দমকল ও জয়পুর থানায়। এরপর দমকল কর্মীরা জেসিবি এনে ধ্বংসস্তূপ সরাতে শুরু করেন। কিন্তু এতে প্রায় ৪ ঘন্টা সময় লেগে যায়। কিন্তু ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে বাবা ও ২ ছেলেকে উদ্ধার করলে দেখা যায় বাবা অনিল বিশ্বাস বেঁচে থাকলেও মৃত্যু হয়েছে দুই ছেলে সন্তোষ বিশ্বাস ও বিকাশ বিশ্বাসের। ঘটনার পির গুরুতর জখম অবস্থায় অনিলবাবুকে দ্রুত বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসক সূত্রে খবর, দীর্ঘক্ষন ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়ে থাজায় অনিলবাবুর শারীরিক অবস্থা বেশ গুরুতর।