নিজস্ব সংবাদদাতা: জবাব আজই মিলবে অথবা আর বড় জোর দিন ১৫। এসপার ওসপার লড়াইয়ের এখন প্রতিটি মুহূর্তই দামি, প্রতিটি সমাবেশে হা পিত্যেশ করে থাকা কখন আসল কথাটা বলবেন ‘দাদা’! দাদা মানে শুভেন্দু অধিকারী আর ‘আসল কথা’ মানে একলা লড়ার, তৃণমূলের বিরূদ্ধে লড়ার। আজ ১৯ শে নভেম্বর, বৃহস্পতিবার রামনগরের সভায় সেরকমই কিছু বলবেন কী দাদা? উন্মুখ হয়ে আছেন শুভেন্দুর অনুগামীরা। সভাটা নেহাতই সমবায় সপ্তাহ পালনের সভা, রাজনৈতিক কোনও সভা নয় কিন্তু সভাটি শুধু স্থানগুনেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এসভা কাঁথি শহরে হতেই পারত কিন্তু সভা ডাকা হয়েছে রামনগরে, অধিকারী পরিবারের চির বিরোধী তৃনমূল বিধায়ক অখিল গিরির খাস তালুকে। অখিল গিরি, তৃণমূলের একমাত্র পদাধকারী নেতা যিনি লাগাতার শুভেন্দু অধিকারীর নাম ধরে বিরোধিতা করে যাচ্ছেন। ফিরহাদ হাকিম বা কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত ঠারে ঠারে নয়। তাই এই সভা থেকে জবাব দিতে পারেন শুভেন্দু এমন আশাও করছেন তাঁর অনুগামীরা।
অখিল বলেছেন, প্রতীক আর নেত্রীর ছবি ছাড়া একের পর এক শুভেন্দু অধিকারী যখন সভা করছেন তখন মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিয়ে করুন না কেন? বলেছেন, বিজেপিকে সুবিধা করে দিতেই উঠে পড়ে লেগেছেন শুভেন্দু অধিকারী এবং কর্মীদের বিভ্রান্ত করছেন কারন মুখে দল বা নেত্রীর নাম নিচ্ছেননা অথচ দলের দেওয়া পদগুলি ব্যবহার করছেন! অখিল গিরির শেষতম মারাত্মক সংযোজন, রিগিং করেই ভোটে জিতে আসেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রশ্ন একটাই রামনগরে অখিল গিরির এলাকায় দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীর আজকের সভার থেকে সেই আক্রমনের জবাব মিলবে কিনা? কী জবাব দেবেন মন্ত্রী? উন্মুখ অনুগামীরা।
বুধবার দুপুরে নিমতৌড়ির সমবায় সভা থেকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি মন্ত্রী। বলেছেন, সমবায় আন্দোলনে তিনি উড়ে এসে জুড়ে বসা লোক নন কারন তিনি তাঁর তরুণ বয়স থেকেই সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত। বলেছেন, সমবায়ের যত পদে রয়েছেন সবই ইলেক্টেড বা নির্বাচিত পদ। কোনোটাই মনোনিত হয়ে আসেননি। ইঙ্গিতটা পরিষ্কার, কারও দয়ায় তিনি সমবায় নেতা নন, তিনি নিজের যোগ্যতায় নেতা।
বুধবার বিকালে পূর্ব মেদিনীপুর থেকে ১৫০কিলোমিটার উজান ঠেলে এসেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদায়। কিছুদিন আগে এখানেই ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁর ফ্লেক্স। তাঁর অনুগামীদের দাবি কাজটা দলের মধ্যে থাকা শুভেন্দু বিরোধীদেরই। জবাবটা দেওয়া দরকার ছিল তাই বেলদার কেশিয়াড়ী মোড় থেকে গঙ্গাধর একাডেমির মঞ্চ অবধি প্রায় সাতশ মিটার অনুগামীদের সঙ্গে পথ হেঁটেছেন তিনি। তাঁর অনুগামীদের দাবি, প্রায় ৫০০ অনুগামী তাঁর সাথে পথ হেঁটেছেন যেখানে শুধু সবং থেকেই ৩০০জন উপস্থিত ছিলেন শেখর মাইতির নেতৃত্বে। ছিলেন খড়গপুর শহরের মুনমুন বণিক, দাঁতন থেকে রুদ্রাংশু বেরা, চন্দ্রকোনা রোড থেকে প্রণব ঘোষ এর নেতৃত্বে অনুগামীরা।
বুধবার টানা মহড়ার পর অবশেষে আজ রামনগরের মেগা শো! জানা গেছে বিশাল মঞ্চ তৈরি হয়েছে এই সমাবেশের জন্য। আশেপাশের থানা এলাকাগুলি থেকে ১০হাজার সমবায় সদস্য আসবেন এই সভায়। সভা পুরো অরাজনৈতিক কিন্তু টান টান হয়ে উন্মুখ রাজনীতির গূঢ় সঙ্কেত টুকু বুঝে নেওয়ার জন্য। না, শুধু স্থানীয় জনতা নয়, গোটা বাংলাই কান খাড়া করে আছে, কী বলেন শুভেন্দু অধিকারী তা শোনার জন্য।