ওয়েব ডেস্ক : বুধবারই রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ১০০০ ছুঁয়েছে৷ নতুন করে লকডাউনের পথে হাঁটলেও সংক্রমণকে কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না। এরমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় করোনা কোয়ারেন্টাইন সেন্টার তৈরি ও করোনায় আক্রান্ত মৃত দেহের দাহ করা নিয়ে ক্রমশ অশান্তি লেগেই রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে৷ শ্মশানে করোনা রোগী পোড়ানো হচ্ছে জানতে পারলেই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে৷ শুরু হচ্ছে বিক্ষোভ। এমনকি এলাকার স্কুল কিংবা ফাঁকা বাড়িতে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার পর্যন্ত করতে দেওয়া হচ্ছে। একই চিত্র রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়৷ এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমার বডির মধ্যে চুল্লি বানিয়ে পুড়িয়ে দিন।”
দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের হার যে দিন দিন বাড়বে তা আগেই আঁচ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিয়েছে বাংলা সহ প্রতিটি রাজ্য। করোনা পরিস্থিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বেশ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালকে পুরোপুরি কোভিড হাসপাতাল হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয় রাজ্যের বেশ কিছু প্রথম সারির বেসরকারি হাসপাতালও অধিগ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার। এমনকি বিভিন্ন জায়গায় গড়ে তোলা হয়েছে সেফ হোম। কিন্তু রাজ্যে যখনই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার কিংবা করোনা রোগীর দেহ সৎকার করা হয় সেইসময় বারংবার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে চিকিৎসক ও পুলিশকর্মীদের৷ আবার কখনও কখনও করোনা রোগীর দেহ না হওয়া সত্ত্বেও শেষকৃত্যে বাধা দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত এই সমস্ত ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে তারই বহিঃপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, “আমার বডির মধ্যে চুল্লি বানিয়ে পুড়িয়ে দিন।”
পাশাপাশি, এদিন কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কী দিতে পেরেছেন আপনারা? আমরা ভেবেছিলাম ১০ হাজার ভেন্টিলেটর পাবো। ফ্রি ড্রাগস, পিপিই পাবো। খালি হাতে তালি বাজালে হয়ে গেল? কী দিয়েছেন? যা দিয়েছেন। তা দিয়ে মার্চ থেকে এখনও চলে যাবে? সামনেই নির্বাচন বলে একটা রাজ্যকে সারাক্ষণ গালি দেওয়া হচ্ছে। এরপর তো এ থেকে জেড নিয়ে আসবেন। সব সময় রাজনীতি করবেন না। বাংলায় যা আছে তাই দিয়ে করোনা সামাল দেবো।”
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্যদফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৯০ জন। যার মধ্যে কলকাতাতেই রয়েছেন ৪৯৬ জন। ২৪ ঘন্টায় মৃতের সংখ্যা ২৩ জন। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০২৩ জন। পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ১৮০ জনের। তার মধ্যে ৫.৪৫ % মানুষ কোভিড আক্রান্ত। এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত বাংলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৬ হাজার ১১৭ জন। তাঁর মধ্যে চিকিৎসাধীন ১৩ হাজার ৬৭৯ জন।