নিউজ ডেস্ক: সারা দেশেই যেন আগুনের মত ছড়িয়ে পড়েছে দারুণ সুখবর। জানুয়ারি থেকে আমজনতার জন্য খুলে যাচ্ছে পুরীর মন্দির, জগন্নাথ ধাম। বুধবার, দীর্ঘ ৯ মাসের প্রতীক্ষার অবসান শেষে খুলে গিয়েছে পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দির। করোনার প্রকোপে এতদিন বন্ধ ছিল মন্দিরটি। এদিন পুরোহিতদের পরিবারের লোকজনরা প্রথমে সুযোগ পান জগন্নাথ দেবের দর্শন করার। বুধবার সকাল ৪.৫৯ মিনিটে এদিন গর্ভগৃহের দরজা খোলা হয় । তারপর সবরকম রীতি-রেওয়াজ মেনে চলে পূজোপাঠ। এরপর পুরোহিতদের বাড়ীর লোকেরা প্রবেশের অনুমতি পান।
২০ মার্চ থেকে বন্ধ ছিল জগন্নাথ মন্দির। এমনকী রথযাত্রাও সারা হয়েছে নমো নমো করে। প্রথমে সুপ্রিম কোর্ট রথ যাত্রার অনুমতিই দেয়নি কিন্তু রথযাত্রার ধারাবাহিকতা নষ্ট হবে এমন অনুরোধ জানিয়ে ফের আদালতের দ্বারস্থ হন মন্দির কর্তৃপক্ষ। সারা পুরী জুড়ে ৪৮ঘন্টা ১৪৪ধারা জারি করে কেবলমাত্র পুরোহিত ও সেবায়েতদের উপস্থিতিতে রথযাত্রার অনুমতি দেন সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়। ছিলেন না কোনও সাধারণ দর্শনার্থী। যাঁরা রথের দড়ি টানবেন তাঁদের প্রত্যেকেরই করোনা পরীক্ষার পর কেবলমাত্র নেগেটিভ পন্ডারাই সুযোগ পান রথের দড়িতে হাত দিতে।
এতদিন বাদে বুধবার জগন্নাথ বলরাম আর সুভদ্রাকে দর্শন করে অনেক ভক্তের চোখে আবেগ মিশ্রিত অশ্রু ঝড়ে পড়ে। এক মহিলা ভক্ত বলেন যে তিনি আবেগ চাপতে পারেননি। দেবদর্শন আগে এত সুন্দর হয়নি বলেও জানান তিনি।
পুরীর জেলাশাসক জানিয়েছেন যে শুধু সেবায়েতগণ ও তাঁদের পরিবারবর্গ ২৫ ডিসেম্বর অবধি দর্শন করতে পারবেন। তাঁদের পরিচয়পত্র নিয়ে যেতে হবে। তারপর ২৬-৩১ ডিসেম্বর অবধি পুরীর স্থানীয়রা জগন্নাথের দর্শন করতে পারবেন। পুরসভার লোকেরা বাড়ী বাড়ী গিয়ে টোকেন দিয়ে আসবেন বাড়ীর কর্তার নামে। কখন তাঁরা যেতে পারবেন সেটা প্রশাসনই বলে দেবে। তারপর নতুন বছরের প্রথম দুই দিন ভিড় এড়াতে মন্দির বন্ধ থাকবে। সবার জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হবে ৩রা জানুয়ারি থেকে। তবে সেদিন থেকে কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট বাধ্যতামূলক মন্দিরে প্রবেশ করার জন্য। দশ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ উর্ধ্বদের মন্দির প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। শুধু জগন্নাথ দেব নয়, লিঙ্গরাজ, সাক্ষী গোপাল সহ অন্য মন্দির খোলার কাজও শুরু করেছে প্রশাসন।
তবে এতদিন দিন পর জগন্নাথের মন্দির খুলে যাওয়ায় ভক্তরাও খুশি। অনেকেই জগন্নাথের মূর্তির সামনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন। তাঁদের আশা, ঠাকুরের কৃপায় এবার নিশ্চিত ভাবেই করোনার তাণ্ডব কেটে যাবে। গোটা পুরী জুড়েই এখন সাজো সাজো রব। সবার জন্য মন্দিরের দ্বার উন্মুক্ত হচ্ছে জেনে খুশিতে ফেটে পড়েছেন ব্যবসায়ী ছাড়াও পর্যটন শিল্প, হোটেল মালিক ও ছোট ছোট দোকানদাররা। ভক্ত ও পর্যটক হীন পুরী প্রচন্ড ভাবে মার খেয়েছে অর্থনৈতিক ভাবে। ফের উপার্জনের আশায় আপামর পুরীর নাগরিকবৃন্দ।