টেক ডেস্ক: আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর দরকার নেই। সময় ও ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে স্বাস্থ্য সাথীর স্মার্ট কার্ড বাড়িতে বসেই যাতে পেতে পারেন তার উদ্যোগ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ইতিমধ্যেই জনসাধারনের সুবিধার্থে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সম্প্রতি নতুন প্রকল্প চালু করেছে, যার নাম দুয়ারে সরকার। সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় এখন পৌঁছে যাবে সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় নিজেদের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেন মানুষ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি সুবিধা হচ্ছে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড হাতে পাওয়া। বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার খরচের ধাক্কা সামলানোর জন্য রাজ্য সরকার এই কার্ড লঞ্চ করেছে। চিকিৎসার খরচ সংক্রান্ত সমস্ত সমস্যার মুশকিল আসান স্কিম স্বাস্থ্য সাথী। এতে চিকিৎসার ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সমস্ত খরচ বহন করবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
সমস্যা হচ্ছে যেখানে যেখানে এই কর্মসূচির জন্য শিবির তৈরি করা হচ্ছে, সেখানে অসম্ভব ভিড় থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে, যাতে ধৈর্য হারাচ্ছেন অনেকেই। আবার কোথাও ভিড়ের কারণে ও হুড়োহুড়িও ঠেলায় আহত হয়েছেন কেউ কেউ। তবে আপনি এখন ঘরে বসেই এই কার্ড বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
এর জন্য আপনাকে অনলাইনে ফর্ম ফিলাপ করে স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করতে হবে। সেই কার্ডে পরিবারের সব সদস্যের নাম এবং ফোন নাম্বার নথিভূক্ত থাকবে। তার সাথে আবেদনকারীকে নিজের নাম, মোবাইল নম্বর, আধার নম্বর, জেলা, পুরসভা এবং পঞ্চায়েত বাড়ীর ঠিকানা ও বায়োমেট্রিক তথ্য দিয়ে একটি আবেদনপত্র জমা করতে হবে। আবেদনপত্রের উপরে ডানদিকে গ্রহীতাকে স্বাক্ষর করতে হবে। যদি তার কাছে খাদ্য সাথীর কার্ড থাকে তবে তা জানাতে হবে এই আবেদনপত্রে। অনলাইনে যদি কার্ড পেতে হয় তাহলে WB swasthya sathi yojana @ swasthyasathi.gov.in – এখানে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের পোর্টালে নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তারপরে আপনাকে স্বাস্থ্যসাথী মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করতে হবে। যদি আপনার নাম নথিভুক্ত হয় তাহলে আপনি পরিষেবার আওতায় আসবেন। স্মার্ট কার্ড কোন মহিলা সদস্যের নামে ইস্যু করা হবে। যদি পরিবারে মহিলা সদস্য না থাকে তখন পুরুষ সদস্যের নামে কার্ড তৈরি হবে।
প্রসঙ্গত, ৪ বছর আগে ২০১৬ সালে রাজ্য মন্ত্রিসভার অধিবেশনে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প গৃহীত হয়েছিল। রাজ্যের নাগরিকদের নিখরচায় বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য এই হেলথ স্কিম নিয়ে আসা হয়েছে।
বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরুর এক মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসার খরচ পৌঁছে যাবে সরকারি কোষাগার থেকে। এর মধ্যে প্রায় ১০৬১টি বেসরকারী হাসপাতাল যুক্ত রয়েছে। শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামে মানুষদের কাছে এই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে।
জটিল ক্যান্সার অথবা কিডনির সমস্যা থেকে শুরু করে সেরিব্রাল অ্যাটাক, হৃদরোগ সবকিছুর চিকিৎসার খরচ আপনি বহন করতে পারবেন এই কার্ডের দ্বারা। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করানো সম্ভব হবে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের মাধ্যমে। কোন কাগজের দরকার পড়বে না অথবা কোন নগদ টাকার দরকার পড়বে না। শুধুমাত্র আপনার কাছে থাকতে হবে একটি স্বাস্থ্য সাথী স্মার্ট কার্ড। রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানিয়েছেন,”আগামী মাসের মধ্যে স্বচ্ছতা এবং দ্রুত পরিষেবার অগ্রাধিকার দিয়ে বাকি কাজ করা হবে। স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকরা জানিয়েছেন, প্রতিটি পরিবারকে বছরে ৫ লক্ষ টাকার বীমার আওতায় আনা হয়েছে। হাসপাতালে ক্যাশলেস পরিষেবা আপনি পাবেন। এমনকি মহিলা সদস্যের বাপের বাড়ী এবং শ্বশুর বাড়ীর সব সদস্য এই আওতায় আসবেন।