নিজস্ব সংবাদদাতা: পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম এই তিনজেলার মোট ৩৫টি আসনে তৃণমূলকে শূন্য করে দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিলেন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির এক বিশাল রোড-শো তে অংশ নিয়ে এমনটাই জানালেন নন্দীগ্রামের সদ্য প্রাক্তন হওয়া বিধায়ক।
২৪ঘন্টা আগে এই কাঁথির বুকে দাঁড়িয়ে তৃনমূলের সাংসদ সৌগত রায় এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের ১৬টি বিধানসভা আসনে ভালো ফল করবে তৃনমূল। বৃহস্পতিবার তারই প্রত্যুত্তরে শুভেন্দু জানিয়ে দিলেন পূর্বের ১৬ তো দূরস্ত পশ্চিমের ১৫ এবং ঝাড়গ্রামের ৪টি আসনও তৃনমূলকে পেতে দেবেনা ভারতীয় জনতা পার্টি। এদিন দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে তিনি জানিয়েছেন পদ্ম ফোটানোর পরেই ঘুমোতে যাবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার কাঁথির ৬কিলোমিটার রোড-শো বাস্তবিকই শুভেন্দুর মনে এই আত্মপ্রত্যয় জাগানোর মত যথেষ্টই ছিল। বিজেপির নিজস্ব শক্তির পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী তথা অধিকারী পরিবারের নিজস্ব জনমত যুক্ত হয়েছিল এই রোড-শো তে। যা নিশ্চিত ভাবেই বুধবার তৃনমূলের পদযাত্রাকে ছাপিয়ে কয়েকগুণ বেশি। বৃহস্পতিবার কার্যত গেরুয়া ঝড় বয়ে গেছে কাঁথির ওপর দিয়ে। আর সেই ঝড়ে ভাসতে ভাসতে সৌমিত্র খাঁ, জয়প্রকাশ মজুমদারদের সঙ্গে নিয়ে শুভেন্দু বলেছেন, ‘ যে মন্ত্রী(ফিরাদ) কলকাতাকে মিনি পাকিস্তান বলেন তিনি আজ টিভির সামনে বসে দেখুন জনতা কার সঙ্গে আছে?’ সৌগত রায়কে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেছেন, “ভোট গণনার দিন আপনাদের অধিকারী পরিবারে আপনাদের নেমন্তন্ন রইল। ভোটে জিততে পারলে মিষ্টি খেয়ে যাবেন।”
এদিন বেলা ৩টেয় কাঁথি-মেছেদা বাইপাস থেকে শুরু হয় পদযাত্রা। কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার পথ জনস্রোত প্রায় ২ঘন্টা হেঁটে কাঁথি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মাঠে আয়োজিত জনসভায় এসে থেমেছে। কাঁথির পথ দিয়ে শুভেন্দুর মিছিল এগনোর সময় দুপাশের বাড়িগুলির ওপরেও স্থানীয় বাসিন্দারা ভিড় করে পদযাত্রা দেখেছেন, ফুল ছুঁড়ে দিয়েছেন। উদ্দীপ্ত শুভেন্দু বলেছেন, ‘আজ মানুষ আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন আমার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। অগনিত মানুষ সমর্থন করেছেন আমার সিদ্ধান্ত কে।”
এদিন শুভেন্দু জনসভায় ফের অভিষেক ব্যানার্জীর নাম না করেই আক্রমন করে বলেছেন, ‘আমার আপত্তি ভাইপোতে নয়। আমার আপত্তি তোলাবাজ ভাইপোয়। এতদিন গরু চোর, কয়লা চোর ছিল এবার যদি তৃনমূল যেতে তবে মানুষের কিডনি অবধি বেচে দেবে।’ কাঁথির প্রতি তৃনমূল কতটা অবিচার করেছে বোঝাতে গিয়ে শুভেন্দু বলেছেন, ‘ঝাড়গ্রাম, আলিপুর দুয়ারের মত ছোট এলাকা জেলা হয়ে যেতে পারে কিন্তু কাঁথি হয়না। ভাইপোর ডায়মন্ড হারবারে ২ টো মেডিক্যাল কলেজ অনুমোদন পায় কিন্তু কাঁথিতে একটা মেডিক্যাল কলেজ করা যেতে পারেনা!”
আগামী ৭ই জানুয়ারি মূখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে আসছেন। সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, ‘আসুন, মাননীয়া আসলে ভালই হয়, নন্দীগ্রামের রাস্তাঘাট গুলো ভেঙে চুরে গিয়েছে। আপনি আসলে একটু সারানো হবে।’ এরপরই তিনি বলেন, ‘আসলে আসবেন তো আমাকে নিয়ে বলতে। আমি ১০ই নভেম্বর, ৭ই জানুয়ারি, ১৪ই মার্চ নন্দীগ্রাম যাই। এবার আপনি আসছেন, আমার আর যাওয়ার দরকার হবেনা, স্বদেশ নায়েকরাই আপনার সভার জবাব দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তবে আমি যাব পরের দিন। ৮ই জানুয়ারি আমাকে নিয়ে বলা সব কথার জবাব দিয়ে আসব সেদিনই।”