নিজস্ব সংবাদদাতা: ২রা মের পর পাকাপাকি বিশ্রাম নিতে চলেছেন বলে জানিয়ে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়নগড় এবং দাসপুরে পার্টির দুই প্রার্থীর সমর্থনে দুটি জনসভায় অংশ নিয়েছিলেন মিশ্র। পাশাপাশি এদিনই কেশপুরের জামসেদ আলি ভবনে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে একটি সাধারণ সভাও করেন তিনি। সেখানেই সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেন নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া বাজারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়ার প্রশ্নটি। উত্তরে মিশ্র বলেন, ‘দেখুন আমি ওনার প্লাস্টার খুলে দেখিনি পায়ের কী অবস্থা। আমি ওনার এই পরিস্থিতির সঙ্গে সহানুভূতিশীল। তবে ঘটনা এটাই যে ওনার বিশ্রাম যাওয়ার সময় এসেছে।আগামী ২রা মে’র পর আর ওনাকে নবান্ন যেতে হবেনা। এবার থেকে পাকাপাকি বিশ্রামেই থাকবেন উনি।”
কারন ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এদিন এক শ্রেণীর সংবাদমাধ্যমকে কটাক্ষ করেছেন মিশ্র। বলেছেন, “এখন মিডিয়ার একটা অংশ শুধুই প্রশ্ন করেন মোদী এই বলেছে, দিদি এই বললেন, আপনাদের প্রতিক্রিয়া কি? কে কোথায় কি বললো আমাদের জানারই বা দরকার কি আর আমাদের প্রতিক্রিয়ারই বা কী দরকার? আমরা কি বলছি সেটাই বলুন, জানার দরকার হলে সেটাই জিজ্ঞেস করুন।”
মিশ্র বলেন, এতদিন ওই মিডিয়াই বলছিল দুই ফুল ছাড়া নাকি আমাদের দেখা পাওয়া যাচ্ছিলনা। আরে লকডাইনে মানুষের কাছে কারা ছিলো তা বাংলার মানুষ জানেন। এখন মিডিয়া প্রায়ই প্রশ্ন করছে ত্রিশঙ্কু হলে আপনারা কি করবেন? তার মানে কী? আমাদের একটা জায়গা তৈরি হয়েছে নাকি? আমরা বলছি তৃণমূল আর বিজেপি দুটো আলাদা সুতোয় ঝুলছে। নাগপুরের হাতে পুতুল নাচছে দুটি দল। আরএসএস পরিবারের দুই মুখ।এদের এই সুতো এবারে ছোটো দেবেন জনগন আর এতটাই ছোট করে দেবে যে গাঁটছড়া মারার জায়গায় থাকবে না। ফলে ত্রিশঙ্কু হওয়ার কোনো সুযোগ নেই এই নির্বাচনে। বাংলার মাটিতে তেভাগা, জমির আন্দোলন, বর্গা আন্দোলনের মাটিতে নতুন সূর্যোদয় এই একুশের নির্বাচনে।”
নিজের কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এদিন মিশ্র জানিয়েছেন, “যারা ধর্মের নামে বজ্জাতি করে, সাম্প্রদায়িক বিভাজনে দাঙ্গার মোড়ক লাগায় তারাই সংযুক্ত মোর্চার বিরুদ্ধে বিষদগার করছে। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। রুটি রুজির সংকেট দূরীকরনে, মানুষের সমস্যা সমাধানে, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকার সহ সংবিধানের মুখবন্ধে মোটা অক্ষরের নির্দেশ গুলিকে রক্ষাকরার লক্ষে যে লড়াই বাংলার মাটিতে শুরু হয়েছে সেই লড়াই এই নির্বাচনে ইতিহাস তৈরী করবে। বাংলায় সরকার গড়তে চলেছে বিকল্প সংযুক্ত মোর্চা।
মিশ্র আরও বলেন, এবারে মানুষের জয় নিশ্চিত। আত্ম সন্তুষ্টির স্থান নেই। আমরাই একশ দিনের কাজের প্রকল্প চালু করিয়ে ছিলাম।এবার নতুন সরকার সেটাকে দেড়শ দিনে রূপায়ন করবো মানে যাতে সব গরীব মানুষের ঐ দেড়শ দিনের কাজ নিশ্চিত হয়। কাটমানি আর তোলাবাজ আমদানিকারি তৃণমূলকে হঠিয়ে তার নজির সৃষ্টি করবো।
এদিকে শনিবারই মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়ার ঘটনার তদন্তভার গ্রহণ করছে সিআইডি। ইতিমধ্যেই সিআইডির এডিজি অনুজ শর্মার নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, রবি অথবা সোমবার ঘটনাস্থলে যাবেন সিআইডির ওই বিশেষ দলের সদস্যরা। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখবেন তাঁরা।পাশাপাশি তদন্তের স্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় পুলিশের সঙ্গেও কথা বলবেন আধিকারিকরা।