শশাঙ্ক প্রধান: ‘মমতা ব্যানার্জী যে সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠেন সেই সিঁড়িটা ফেলে দেন।’ শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনার মধ্যেই এমনই মন্তব্য করলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভার বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার বুড়ালে আগামী ২৬শে নভেম্বর বামগণতান্ত্রিক জোট আহুত দেশব্যাপী সাধারন ধর্মঘটের সমর্থনে এক সভায় এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই জানালেন চক্রবর্তী।
সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করে শুভেন্দুর বর্তমান অবস্থান নিয়ে। চক্রবর্তী বলেন, ‘শুভেন্দু রাজ্য মন্ত্রীসভায় রয়েছেন। তিনি এখনও তৃণমূলে রয়েছেন। তিনি যথেষ্ট বড় হয়েছেন ফলে তিনি কী করবেন সেটা তিনিই ঠিক করবেন কিন্তু এটা তিনি বুঝে গেছেন যে, মমতা ব্যানার্জী যে সিঁড়ি বেয়ে ওঠেন সেটাকে ফেলে দেন!”
পশ্চিম বাংলার রাজনীতিতে ইদানিং বিজেপির ক্ষেত্রে ‘বহিরাগত’ যে তকমা তৃনমুল দিচ্ছে সে প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ” নেতারা বাইরে থেকে আসতেই পারেন কিন্তু রাজ্যের দল পরিচালনা করবেন কারা? যাঁরা এ রাজ্যের, বাংলার সংস্কৃতি রাজনীতি কিছুই বোঝেননা। বিজেপি কাদের নিয়ে আসছে ভোট লড়ার জন্য? কেন বাঙালি কী রাজনীতি বোঝেনা? অন্যদিকে তৃনমূল দলটাকে দেখুন, আগে ছিল পিসি-ভাইপোর দল এখন সেটাও নেই! তৃনমূল এখন আর মমতা ব্যানার্জীর দল নয়, দলটা পি.কে এন্ড কোম্পানির কাছে টেন্ডার দিয়ে দেওয়া হয়েছে! এই পি.কে কোথাকার?”
সুজন চক্রবর্তী বলেন, “তৃণমূলের অবস্থা দেখুন, পুরানো তৃণমূলের লোকেরাই এখন এই দলে সম্মান নিয়ে থাকতে পারেনা। বাম আমলে সেই লোকেরা যে মর্যাদা নিয়ে থাকতে পারতেন এখন তাঁদের সরকার অথচ তারাই থাকতে পারছেনা।” চক্রবর্তীর দাবি তৃণমূলের দিন শেষ হয়ে গেছে, তৃনমূল এখন ডুবন্ত তরী, ২০২১ য়ে যার বিদায় নিশ্চিত এমন অবস্থায় কেউ কেউ আবার বাতিল তৃণমূলীদের নিয়ে তৈরি বিজেপিকে বিকল্প বলে ভাবছেন! আমি বলি এ যেন একটা খারাপ দোকানের পচা মাল নিয়ে গিয়ে অন্য দোকানে বিক্রি করা।”
চক্রবর্তী বলেন, ‘ যে যে কথা বলে মানুষের ভোট নিয়ে তৃনমূল ক্ষমতায় এসেছিল এখন মানুষ বুঝতে পারছেন প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁরা প্রতারিত হয়েছেন। অন্যদিকে বিজেপির দিকে দেখুন, তারা বলছে তারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে কিন্তু এই লড়াই মেকি। যদি লড়ত তাহলে সিবিআই-ইডি কে চুপ করিয়ে রেখেছে। যদি সিবিআই ইডি কে কাজ করতে দিত তবে তৃনমুল তো এমনিই শেষ হয়ে যেত।” এদিন রুইনান থেকে বুড়াল অবধি কংগ্রেসের সঙ্গে বাম জোটের এক যৌথ মিছিলে চার কিলোমিটার পথ হাঁটেন চক্রবর্তী।