অশ্লেষা চৌধুরী: যদি বলা হয় মর্নিং শোজস্ দ্য ডে বা সকাল দেখেই বোঝা যায় দিনটা কেমন যাবে তবে বলতেই হয় বছরটা ভালো যাবেনা তৃনমূল কংগ্রেসের। বছরের শুরুতেই ১লা জানুয়ারি কাঁথির অধিকারী পরিবারের কনিষ্ঠ পুত্র সৌমেন্দুর হাত ধরে কাঁথি পুরসভার ১৪জন ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর এবং ৪জন প্রাক্তন কাউন্সিলর যোগ দিয়েছেন পদ্মশিবিরে। ভাই সৌমেন্দু ও বাকিদের হাতে পদ্ম পতাকা তুলে দিয়েছেন অধিকারী পরিবারের মধ্যম সন্তান, বর্তমান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন সকালেই সোনাচূড়ার সভা থেকে নিজেই এই ঘোষণা করছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। আর তার কিছুক্ষনের মধ্যেই নতুন বছরের প্রথম দিনেই কাঁথিতে একটি জনসভায় দাদা শুভেন্দুর হাত ধরে পদ্ম শিবির সমৃদ্ধ করলেন ভাই সৌমেন্দু অধিকারী ও বাদ বাকি ওয়ার্ড নেতারা।
এদিন নিজের গড়ে জোড়া সভা শুভেন্দু অধিকারী। এর মধ্যে প্রথমটি নন্দীগ্রামের সোনাচূড়ায় এবং অপরটি কাঁথিতে। সোনাচূড়ায় প্রতিরোধ সভা থেকেই প্রাক্তন বিধায়ক ভাই সৌমেন্দুর যেগদানের কথা ঘোষণা করেন। তিনি দাবী করেন, ‘তৃণমূলের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা আমাদের ভয় পাচ্ছে।’ শুভেন্দু বলেন, ‘ধর্মীয় সভায় যাওয়ার পথে হামলা চালিয়েছে। মহিলা ও শিশুদেরও ছাড়েনি।‘ এরপরেই হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘কাঁথি থেকে তৃণমূলকে ঝেঁটিয়ে পরিষ্কার করে দেব।’ সাথে এও জানিয়ে দেন, ‘কাঁথির সভায় বিজেপিতে যোগ দেবেন সৌমেন্দু। তিনি ছাড়াও যোগ দেবেন আরও কয়েকজন।’ শুভেন্দুর দাবী, নির্বাচনী বিধি চালু হলেই খেলা দেখতে পারবে রাজ্যবাসী।
মঙ্গলবার, নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় যোগ দিতে আসার পথে, সোনাচূড়ার ভূতার মোড়ে আক্রান্ত হন বিজেপি কর্মীরা। বাস ভাঙচুর করা হয়। তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। বুধবার আহত দলীয় কর্মীদের হাসপাতালে দেখতে যান সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রথমে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও তারপর তমলুক জেলা হাসপাতালে যান তিনি। আহতদের কাউকে বুকে টেনে নেন। কারও গায়ে-মাথায় হাত বুলিয়ে স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। কীভাবে হামলা হল? সেসময় কতজন ছিল তাও জানতে চান শুভেন্দু বাবু। এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফের তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। বলেন, ধর্মীয় সভায় আসার পথে হামলা, প্রয়োজনে ফের আন্দোলনে যাব, নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের জন্য লড়াই করেছি, প্রয়োজনে ফের আন্দোলনে যাব।‘
প্রসঙ্গত, ১৯ শে ডিসেম্বর শুভেন্দুর পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তাঁর বাকি সদস্যদের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে গিঞ্জন শুরু হতে থাকে। এরই মধ্যে গত ২৮ শে ডিসেম্বর বোমা ফাটান জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি। কনিষ্ঠ শিশির পুত্র তথা কাঁথি পুরসভার প্রশাসক সৌমেন্দু অধিকারীকে নিশানা করে বলেন, দাদার (শুভেন্দুবাবুর) অনুগামীদের বা বিজেপির কর্মসূচি আয়োজন করছেন সৌমেন্দু। তিনি মিছিলেই শুধু হাঁটছেন না, বাকি সব করছেন। কাঁথির প্রশাসকের দ্বিচারিতা দল ও সরকার ধরে ফেলেছে। কিছুদিনের মধ্যেই প্রশাসক পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হবে বলেও মন্তব্য করেছেন।যদিও অধিকারী পরিবারের থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছিল সেই সময়। তবে আজ শুভেন্দুর ঘোষণার পর অখিলের সেই বাণীই যেন সত্যি হল আজ।