ওয়েব ডেস্ক : বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। শনিবার সকাল থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও এদিন বিকালের পর থেকেই আচমকা তিনি অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। জানা গিয়েছে, অভিনেতার মাল্টি অর্গ্যান ফেইলিওর হয়ে গিয়েছে। সেকারণে শনিবারই চিকিৎসকদের তরফে প্রবাদপ্রতিম অভিনেতার পরিবারকে ডেকে পাঠানো হয়। দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের তরফে এমনটাই জানা গিয়েছে।
এবিষয়ে অভিনেতার মেডিক্যাল দলের এক চিকিৎসক বলেন, “আমাদের সবরকমের চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া সাড়া দিচ্ছে না। আগের থেকে সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাঁকে সবধরনের সাপোর্টে রাখা হয়েছে এবং নিজের জীবনের জন্য লড়ছেন তিনি।’ পাশাপাশি ওই চিকিৎসক আরও জানিয়েছেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলেছে কোভিড এনসেফেলোপ্যাথি। এর জেরে গত দেড় মাস যাবৎ এত চিকিৎসা সত্ত্বেও কোনোভাবেই তা কাজ করেনি। সেকারণেই অবিনেতার চিকিৎসায় একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যুক্ত থাকলেও ‘সব চেষ্টা’ই ব্যর্থ করে দিয়েছে।
এই বিষয়ে অভিনেতার চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ওই চিকিৎসক বলেন, “স্টেরয়েড, ইমিউনোগ্লোবুলিন (অ্যান্টিবডি), কার্ডিয়োলজি, অ্যান্টি-ভাইরাল থেরাপি, অনাক্রম্যতা – সবরকমের চেষ্টা করেছি আমরা। কিন্তু তাতেও কোনো লাভ হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “আমরা দুঃখিত যে উনি সাড়া দিচ্ছেন না। আমরা শেষ চেষ্টা করছি। ওঁনার পরিবারও সেটা মেনে নিয়েছেন। উনি প্রায় এমন জায়গায় আছেন, যেখান থেকে একমাত্র ‘মিরাকেল’ ছাড়া ফেরা কার্যত অসম্ভব। ”
অথচ গত বৃহস্পতিবারই বর্ষীয়ান অভিনেতার শরীরে প্লাজমার মাত্রা বৃদ্ধির জন্য প্রথমবার তাঁর প্লাজমা থেরাপিও করা হয়েছে। এবিষয়ে বেসরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, অভিনেতার ‘প্রথম দফার’ প্লাজমা থেরাপি করা হয়েছে। বাহ্যিক কোনও রক্তক্ষরণ হয়নি। থেরাপি ভালোভাবেই সফল হয়েছে। পাশাপাশি বৃহস্পতিবার প্লাজমাথেরাপির আগে বুধবার বর্ষীয়ান অভিনেতা সৌমিত্রবাবুর শ্বাসনালিতে ট্রাকিওস্টমি করা হয়েছিল। যাতে নাক-মুখের বদলে গলায় থাকা ওই টিউবের মুক্ত প্রান্তের মধ্য দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস হয়। বুধবার অস্ত্রোপচারের পর বেসরকারি হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল, সৌমিত্রবাবুর শ্বাসনালিতে ট্রাকিওস্টমি সফল হয়েছে।
এদিকে প্লাজমা থেরাপি সফল হওয়ায় চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, “যদিও তাঁর রক্তচাপ সামান্য পড়েছিল। যা সহজেই ঠিক করা সম্ভব হয়েছে। বিকেলে আমরা আবারও সিটি স্ক্যান করেছি। তাতে কোনও অস্বাভাবিকতা মেলেনি। তিনি এখন স্থিতিশীল আছেন এবং তাঁর রক্তচাপও এখন ঠিকঠাক আছে।” এরপর শনিবার থেকে সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার ফের অবনতি হতে শুরু করে। এদিকে ইতিমধ্যেই শনিবার রাত থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ভুয়ো মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। তা মূহুর্তে ভাইরালও হয়ে গিয়েছে। এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই অভিনেতার ভুয়ো মৃত্যু শুনে ভেঙে পড়েছেন তাঁর বহু অনুরাগী।