মেদিনীপুর : সকালে ঘুম থেকে উঠে চমকে গেলেন রতন মাহাত। বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি গাছ! এ গাছটা কোত্থেকে এল? ভাবতে ভাবতে হঠাৎ ই বিস্ময়! আরে এটা তো তাদেরই গাছে, একটা জামগাছ। গতকাল ঘুমোতে যাওয়ার আগেও দেখেছেন পাতা ভরে ঝাঁকালো হয়েছিল গাছটা? এই বর্ষাতেই নতুন পাতা বেরিয়েছিল। দু’মাসে সেগুলো বেশ পূরুষ্টু হয়েছিল রাতারাতি সেই পাতা গেল কোথায়? কিন্তু এ বিস্ময় শুধুই রতন মাহাত নয়। মেদিনীপুর সদর ব্লকের জঙ্গলমহল বলে পরিচিত গুড়গুড়িপাল থানা এলাকার গ্রামের পর গ্রামে ঘটে চলেছে এমনই কান্ড। এক রাতেই একেকটা বড় সাইজের গাছ পাতা শুন্য হয়ে যাচ্ছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গুড়গুড়িপাল থানার বেলিয়া, খড়িকাশুলি গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, “এক ধরণের পোকা শুধু জাম গাছের সমস্ত পাতা খেয়ে শেষ করে দিয়েছে। এলাকায় থাকা পঞ্চাশ থেকে ষাটটি গাছ পাতা বিহীন ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার থেকে ৷ রতন মাহাতের মতই গ্রামবাসীদের একই অভিজ্ঞতা। আগের দিনের দেখা জামগাছটি পাতাহীন অবস্থায় শুকনো দাঁড়িয়ে রয়েছে ৷ কয়েকটি জামগাছ এমন দেখার পরে পরদিন দেখা গেল অন্য গাছ গুলিরও একই অবস্থা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জামগাছগুলির এই অবস্থা হচ্ছে ৷খবর যায় কৃষি দপ্তরে ৷ এলাকার এক অবসরপ্রাপ্ত বনকর্মী সুভাষ মাহাত বলেন, শুধুমাত্র জাম গাছের পাতা খেয়ে শেষ করে দিচ্ছে, এমন পোকা এই প্রথম দেখলাম। লক্ষ লক্ষ পোকা এই গাছগুলিতে রয়েছে। তবে এক রাতের বিষয়টি তিনি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, এক রাত নয়, দু-তিন রাত ধরে এই ঘটনা চলছে। গ্রামবাসীদের আশংকা এই ভাবে যদি জাম গাছের পর অন্যান্য গাছের পাতাও শেষ করে দেয় তাহলে বিপদ।
খবর পেয়ে শনিবার ঘটনা স্থলে হাজির হয়েছিলেন জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি ৷ তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে এটি একধরনের শুঁয়ো পোকা৷ আমি ভেবেছিলাম বিষয়টি হর্টিকালচার বিভাগের কিন্তু এখন দেখছি বিষয়টি বন বিভাগের আওতায় পড়ে। ওনাদের জানিয়েছি বিষয়টি । ওঁরা এসে বিষয়টি দেখুন।’