অশ্লেষা চৌধুরী: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার শাসক শিবির; প্রকাশ্য দিবালোকে চলল গুলি, মৃত এক, গুরুতর জখম আরও দু’জন। ঘটনাটি ঘটেছে, উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর থানার আগডিমটিখন্তি গ্রামপঞ্চায়েতের বন্দিরাগছ এলাকায়। ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে। মৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ ফায়াল, বয়স ২৪ বছর এবং আহত দুজনের একজন নাসিম আখতার, বয়স ১০ বছর ও রোশনি খাতুন, বয়স ১৩ বছর।
জানা যায়, চার মাস আগেই ইসলামপুর থানার আগডিমটিখন্তি গ্রামপঞ্চায়েতের বন্দিরাগছ এলাকায় মহম্মদ ফায়ালের পরিবারের সঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য এক্রামুল ও এক্রামুলের সঙ্গী তাইমুলের জমিজমা নিয়ে বিবাদ চলছিল। তা নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েতে সালিশি সভাও বসে। সালিশি সভায় বেশকিছু টাকা জরিমানা ধার্য করা হয় মহম্মদ ফায়ালের পরিবারের উপর। ফায়াল ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করে। ফায়াল দু’দিন আগেই ইসলামপুরে তাঁদের বাড়ীতে এলে ফের তার উপর টাকার জন্য নানাভাবে ওই পঞ্চায়েত সদস্য ও তার সঙ্গীরা চাপ দিতে থাকে বলে অভিযোগ।
বুধবার দুপুরেও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে এবং সেই বিবাদের জেরেই আচমকাই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তাইমুল কিছু দুষ্কৃতি নিয়ে এসে মহম্মদ ফায়ালের পরিবারের উপর হামলা চালায়। অভিযোগ, এলোপাথারি ছড়রা গুলি চালাতে থাকে তারা। গুলিবিদ্ধ হন ফায়াল। সেই সময় রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো রোশনি ও নাসিম, তারাও ওই পরিবারেরই সদস্য, তাদের গায়েও গুলি লাগে। গুলি লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তারা। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের তিনজনকেই উদ্ধার করে স্থানীয়রা ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকেরা মহম্মদ ফায়ালকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। বাকিদের চিকিৎসা চলছে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলেই জানা গিয়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বন্দিরাগছ গ্রামে। দিনে দুপুরে এভাবে শুট আউট ঘটনায় হকচকিত হয়ে যান সকলেই। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তাইমুল সহ অন্যান্য দুষ্কৃতকারীরা সকলেই পলাতক। পুলিশ তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করার পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেওয়ায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়। তবে, পুলিশের বক্তব্য এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগসাজেশ নেই। পুরোপুরি পারিবারিক কারণেই এই গুলি চালানোর ঘটনা এবং এর জেরেই খুন।