অশ্লেষা চৌধুরী: রাজ্যের বুকে মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা; মত্যু হল ৭ জনের, আহত কমপক্ষে আরও ১৫ জন। মুর্শিদাবাদের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধলার মোড় এলাকায় ঘটে যাওয়া এই দুর্ঘটনার ছবি দেখলে শিউরে উঠবেন যে কেউ।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফারাক্কা থেকে জঙ্গীপুরের দিকে দ্রুতগতিতে যাওয়া একটি সাদা স্করপিও গাড়ি হঠাৎই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার লেন ভেঙে পাশের লেনের অটো সহ পরপর দুটি গাড়িতে ধাক্কা মারে। উল্টোদিক থেকে অটোটি সেইসময় যাত্রী নিয়ে আসছিল। দুর্ঘটনার ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু স্করপিওর চালক সহ ৭ জনের। বাকিদের গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, কাশিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজিবুল ইসলামের ছেলে আপেল শেখ স্করপিও নিয়ে জঙ্গিপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। গাড়ির গতি ছিল বেপরোয়া। আচমকা গাড়ির পেছনের টায়ার ফেটে যায় ও নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলে স্করপিওটি। সামনের বাঁ দিকের চাকা খুলে যাওয়াতেই স্করপিওটি নিয়ন্ত্রণ হারায় বলে অনুমান। এরপরেই জাতীয় সড়কের লেন ভেঙে চুড়ে চলে যায় উল্টো লেনে। সেই সময় কয়েকজন যাত্রী নিয়ে অটোটি আসছিল। সাদা স্করপিওটি সজোরে যাত্রী বাহী অটোতে ধাক্কা মারতেই সেটি উল্টে যায় এবং এরপরের দুটো গাড়িতে ধাক্কা মারে সাদা স্করপিওটি। জোরদার এই সংঘর্ষের ফলে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় স্করপিওর চালক সহ মোট সাত জনের। দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে রাস্তার ওপর উল্টে পড়ে থাকতে দেখা যায় সাদা স্করপিওটিকে। ভেঙে যায় অটো। দুর্ঘটনায় উড়ে যায় সেটির ছাদ। যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখা যায় অনেককে। ছুটে আসেন আশেপাশে থাকা লোকজন। স্থানীয়রা গুরুতর জখমদের রক্তাক্ত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠায়, পরে সেখান থেকে কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মৃতেরা প্রত্যেকেই সুতি থানা এলাকার বাসিন্দা।
দুর্ঘটনার জেরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধলার মোড় এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একে একে দাঁড়িয়ে যায় সব গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন। স্বাভাবিকভাবেই এই কারণে সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজটের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। তারা এসে যানজট স্বাভাবিক করে। সেইসাথেই ঠিক কীভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তার তদন্তে নেমেছে সুতি থানার পুলিশ। এমন মর্মান্তিক এক দুর্ঘটনায় এলাকায় যেন স্তব্ধতা ছেয়ে যায়।