অশ্লেষা চৌধুরী: তিনজন ডাক্তার ও ভিডিও গ্রাফি করে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক, কিন্তু সেই নির্দেশ পূরণের কোন হেলদোল নেই, তাই পুলিশের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন মৃত বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের স্ত্রী মালতি রায়। বুধবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এনজেপি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। মালতি দেবীর অভিযোগ, পুলিশের গুলিতে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। রাতের অন্ধকারে তাঁর স্বামীর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে বলে এফআইআর-এ উল্লেখ করেছেন তিনি। এমনকি, আদালতের নির্দেশ মেনে পুলিশ দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্ত করে এখনও পরিবারের হাতে তাঁর স্বামীর দেহ তুলে দেয়নি বলেও অভিযোগপত্রে জানিয়েছেন তিনি।
গত সোমবার বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকায়। ব্যারিকেড ভেঙ্গে বিজেপি কর্মীরা মিছিল এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকলে শুরু হয় পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি। পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় পাথর। পাল্টা লাঠি চার্জ করে পুলিশও। গুরুতর আহত হন বিজেপি কর্মী গাঁজল ডোবার বাসিন্দা উলেন রায়। তাঁকে ফুলবাড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষ করেন। এরপর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসতেই ঘটনার জন্য বিজেপির পক্ষ থেকে বারবার রাজ্য পুলিশকে দোষী করে, যদিও তা মানতে নরাজ শাসকদল।
এই টলমল পরিস্থিতিতেই ফের ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। তিনজন ডাক্তার ও ভিডিও গ্রাফি করে ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দেন বিচারক। দিনের আলোয় ময়নাতদন্তের পর ১১ তারিখের মধ্যে আদালতকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারেটের এনজেপি পুলিশ স্টেশনকে। কিন্তু সেই নির্দেশ মত এখন পর্যন্ত ময়না তদন্তের কাজ শুরু হয়নি। জানা গিয়েছে, বুধবার দিনভর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করেন মৃত বিজেপি কর্মীর স্ত্রী ও পরিবার। কিন্তু দেহ মেলেনি। হয়নি ময়নাতদন্তও।
বুধবার সন্ধ্যায় এ নিয়ে মৃত বিজেপি কর্মীর বাড়ীতে সাংবাদিক বৈঠক করেন বিজেপি-র জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী। তাঁর অভিযোগ, ‘এখনও পর্যন্ত উলেন রায়ের মৃতদেহ তাঁর পরিবার পায়নি। গতকাল আদালত নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ আজও পালন করেনি পুলিশ।‘ এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অধ্যক্ষের সাথে কথা বলে তিনি জানতে পেরেছেন, তাদের কাছে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে আদেশ না আসায় কাজ শুরু করতে পারছেন না।
পুলিশের পক্ষ থেকে বিজেপির পাঁচ উচ্চ নেতৃত্বের নামে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, তৃনমূলের হাতে ক্ষমতা রয়েছে তাই তারা যা খুশি করতে পারে। পাঁচ জন কেন পঞ্চাশ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করতে পারে। পুলিশ প্রশাসনকে দিয়ে তৃনমূল যা খুশি করছে।‘