নিজস্ব সংবাদদাতা: ফের পেশাগত নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করার মাশুল দিয়ে প্রান হারালেন সবংয়ের এক তরতাজা যুবক। সোমবার সবং থানা এলাকা থেকে দু’দুটি মৃত্যুর খবর এসেছে বিদ্যুতের ছোবলের জেরে। তাঁর একটি মৃত্যু ঘটেছে পুরোপুরি পেশাগত নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করায়। একটি ঘটনা ঘটেছে নারায়নবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন কাপাসদা গ্রামে। অন্যটি একই থানার মোহাড় গ্রামে।
জানা গেছে গত কয়েক দিন ধরেই প্রচন্ড গরম চলছে অথচ পাড়ার বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় সমস্যা হওয়ার কারনে স্থানীয় পরিবারগুলির অসুবিধা হচ্ছিল। আশেপাশের বাড়িতে বিদ্যুৎ পরিষেবা অব্যাহত রাখার জন্য নিজেরই পাড়ার একটি বিদ্যুৎ পরিবাহী খুঁটিতে উঠেছিলেন কাপাসদা গ্রামের ৩২ বছরের সঞ্জয় মাইতি। আর সেটা করতে গিয়েই উঁচু খুঁটির ওপর থেকে নিচে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় সঞ্জয়ের।
সঞ্জয় বিদ্যুৎ দপ্তরের অধীন ঠিকাদারের অস্থায়ী কর্মী। নিয়ম অনুযায়ী এঁদের ওপরে উঠে কাজ করার সময় মাথায় হেলমেট ও কোমরে দড়ি বেঁধে কাজ করার কথা। কিন্তু অনেক সময় অর্থ সাশ্রয় করতে ঠিকাদাররা কর্মীদের এসব প্রদান করেননা। কোথাও আবার কর্মীরা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস দেখিয়ে এই নিরাপত্তা ছাড়াই ওপরে উঠে কাজ করেন। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।
নারায়নবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নারায়ন চন্দ্র বেরা জানান, ” বিদ্যুৎ খুঁটিতে কাজ করার সময় সঞ্জয় বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে নীচে পড়ে যাওয়ার সময় খুঁটির তলায় থাকা একটি গাছের ওপরে পড়েন। তাঁর মাথা সরাসরি ওই গাছের একটি মোটা ডালের ওপর পড়ে। যতদূর মনে হয় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।”
সোমবার দিনটা কার্যত অভিশপ্ত হয়ে রইল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানা এলাকার আরও একটি পরিবারের কাছে। এদিন আরও একটি দুঃসংবাদ আসে মোহাড় এলাকা থেকে। ওই গ্রামের ২৬ বছরের যুবক বৃন্দাবন সামন্ত পেশায় মেশিন ট্রলির চালক। সামান্য কিছু জমি রয়েছে তাঁর। আমনের চাষের জন্য জলসেচ করার উদ্দেশ্যে পাম্প মেশিন বসিয়েছিলেন। সেই মেসিন হঠাৎই বিকল হয়ে যায়। মেশিন ট্রলি চালানোর সুবাদে বৃন্দাবন পাম্প মেরামতের কাজ জানতেন তাই কী সমস্যা হয়েছে জানতে তিনি মেশিনটি দেখতে যান।
বৃন্দাবন বুঝতে পারেননি যে শট সার্কিট হওয়ার সুবাদে পুরো মেশিনটাই বিদ্যুৎ পরিবাহী হয়ে রয়েছে। মেশিনে হাত দেওয়ার সাথে সাথেই তিনি নিজেও তড়িদাহত হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীরা দ্রুত তাঁকে সবং গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন তাঁকে।
মঙ্গলবার ২টি দেহই ময়নাতদন্তের জন্য খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। সেখানে ময়নাতদন্তের পর দেহ দুটি পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেয় সবং থানার পুলিশ। সন্ধ্যায় নিকটস্থ শ্মশানে দাহ কার্য সম্পন্ন হয় মৃত ২যুবকের। মোহাড় এবং কাপাসদা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।