Homeএখন খবরচলে গেলেন সবংয়ের মেজো বাবু, জেলার প্রথম করোনা শহিদের জন্য শোকের ছায়া...

চলে গেলেন সবংয়ের মেজো বাবু, জেলার প্রথম করোনা শহিদের জন্য শোকের ছায়া পুলিশ লাইনে

নিজস্ব সংবাদদাতা: জেলার প্রথম করোনা শহিদ হলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানার সেকেন্ড অফিসার বা মেজবাবু অতনু প্রামানিক। মাত্র ৩৮ বছর বয়সেই প্রাণ হারালেন এই করোনা যোদ্ধা। মঙ্গলবার ভোরে হাওড়ার নারায়ণী হাসপাতালে প্রাণ হারিয়েছেন তিনি। আগের দিনই তাঁকে শালবনী হাসপাতাল থেকে নারায়ণীতে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল কিন্তু ১৪ ঘন্টার লড়াই শেষে জয়ী হল মৃত্যুই।

উল্লেখ্য গত ৫তারিখ সবং হাসপাতালে আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় পজিটিভ হওয়ার পরেই ডেবরা সেফ হোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। জ্বর না কমায় দুদিন পরেই পাঠানো হয় শালবনী লেভেল ফোর করোনা হাসপাতালে। তিনদিনের মাথাতেই সরিয়ে নেওয়া হয় আইসিইউতে। সবং পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ পার্থ প্রতিম মাইতি জানিয়েছেন, ‘ ১২ তারিখ রাতেই কথা হয়েছিল ওনার সঙ্গে। কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করাতে বলেছিলেন, আইসিইউতে আছি ফলে ভাল আছি বলি কী করে বলুন তো? ভাবতেই পারিনি এই দুঃসংবাদ অপেক্ষা করছে সবংবাসীর জন্য। এত তৎপর, এত তরুণ আধিকারিক এভাবে চলে যাবেন ভাবতে পারছিনা।”

জানা গেছে সোমবার বিকাল থেকে মেজবাবুর অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করে। চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেননা। এই অবস্থায় দ্রুত তাঁকে নারায়ণীতে স্থানান্তরিত করা হয় এবং সরাসরি ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার আওতায় আনা হয় তাঁকে। রাত ভোর সেই অবস্থা চলার পর মঙ্গলবার ভোরে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে সুগারের প্রকোপ ছিল তাঁর। নিয়মিত ওষুধ খেতে হত তাঁকে। এই কো-মর্বিডিটিই বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল শেষ অবধি। সবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ সুভাষ কান্ডার জানিয়েছেন, “অত্যন্ত মর্মান্তিক এই ঘটনা। সব রকম চেষ্টা করেও ওনাকে ফেরাতে পারলামনা। এই আফসোস রয়ে যাবে আমাদের।”

এমনিতেই সবং থানাতেই ২০জনেরও বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। আক্রান্ত হয়েছিলেন বড় বাবু সুব্রত বিশ্বাস স্বয়ং। ৭২ ঘন্টা আগেই সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন তিনি। কিন্তু ফিরলেন না মেজবাবু। থানা জুড়ে শোকের ছায়া। গোটা সবং থমথম করছে এই অপ্রত্যাশিত শোক সংবাদে। সবং এলাকাতেই বাড়ি ভাড়া করে পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। পুলিশ আধিকারিক হয়েও অকাতরে মিশে যেতেন সবার সাথে। ফলে স্থানীয় মানুষরা খুবই ভালবাসতেন তাঁকে। সবং পঞ্চায়েত সমিতির সাধারন সভায় শোক প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে। ঘটনার খবর পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গেছে পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ লাইন। উল্লেখ্য করোনা আক্রান্ত হয়ে জেলায় এই প্রথম কোনও ফ্রন্টলাইন শীর্ষ করোনা যোদ্ধার মৃত্যু হল । স্ত্রী ছাড়াও রেখে গেলেন একমাত্র শিশুকন্যাকে।

RELATED ARTICLES

Most Popular