Homeএখন খবরআমফানের পর এবার পরিযায়ী শ্রমিকের রেশন কুপনেও ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ, দোকান মালিক...

আমফানের পর এবার পরিযায়ী শ্রমিকের রেশন কুপনেও ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ, দোকান মালিক থেকে শিক্ষক পেল কুপন, সবংয়ে বঞ্চিত পরিযায়ীরা বিক্ষোভে বন্ধ করে দিলেন রেশন দেওয়া

নিজস্ব সংবাদদাতা: ঘাটালে মহকুমা শাসকের গাড়ির চালক পেয়েছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য বরাদ্দ রেশনের কুপন আর সবংয়ে সেই কুপন পেলেন কাপড় দোকানের মালিক, বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক, প্রাক্তন প্রধান যার চৌদ্দগুষ্টিতে কেউ পরিযায়ী নন অথচ গুজরাট মহারাষ্ট্র থেকে ফেরা সেই সব শ্রমিকের দল যারা ঘরে ঢোকার আগে রীতিমত সরকারি কোয়ারেন্টাইনে ১৪দিন কাটিয়েছেন, সরকারের খাতায় যাঁরা পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে নথিভুক্ত তাঁরা কুপন পাননি। এবার ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানার চাউলকুড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের।

চাউলকুড়ি গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত চাউলখোলা গ্রামের আনোয়ার খান জানান, “আমি কেরালায় হোটেলে কাজ করতাম লকডাউনে ফিরে আসি। ১৪ দিন গ্রামেরই শিশুশিক্ষা কেন্দ্রে কোয়ারেন্টাইনে ছিলাম। আমি কুপন পাইনি। চারজনের সংসার কি করে চালাবো জানিনা অথচ দেখছি গ্রামের যাঁরা কোনও দিন গ্রামের বাইরে পা রাখেনি তারাই পাচ্ছে পরিযায়ীদের জন্য বরাদ্দ রেশনের কুপন। আমাদের গ্রামে এরকম ৩০জন পরিযায়ী রয়েছেন যাঁরা কুপন পাননি।”

একই অভিযোগ জানিয়েছেন নেধুয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণপ্রসাদ খাটুয়া। এক বছর মুম্বাইতে থাকার পর দেড় মাস আগে গ্রামে ফিরে ১৪দিন কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তিনি। তিনিও অভিযোগ করেন কুপন পাননি বলে।

স্থানীয় বিজেপি নেতা চাউলকুড়ি অঞ্চল শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ কিঙ্কর হাজরা অভিযোগ করেছেন, “একের পর এক দুর্নীতি হয়েই চলেছে সবং জুড়ে। আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত দের টাকা লুটের পর এবার পরিযায়ী শ্রমিকদের চাল লুট শুরু হয়েছে। ভাবতে পারা যায় গরিব মানুষের জন্য সামান্য বরাদ্দ চাল তাও ছাড়েনা এরা!”

অবশ্য শুধু বিজেপিই নয় বিরোধিতার সুর চড়া হয়েছে শাসকদলের অন্দরেই। স্থানীয় তৃনমূল নেতা শ্যামাপদ কুইলা জানান,” সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে মোট ৩৪৩ জনের তালিকা তৈরি হয় এবং সেই তালিকা তৈরি হয় এলাকার ১২টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকা শ্রমিকদের ভিত্তিতেই। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সেই তালিকা বদলে ৩৪৬জনের তালিকা প্রকাশ হয় আর এই তালিকার বড়জোর ৪৬ জন বাদ দিলে পুরোটাই ভুয়ো, যারা কোনও দিনই পরিযায়ী ছিলেননা।”

এদিকে বুধবারই নেধুয়া গ্রামে রেশন ডিলার সরকারি তালিকা মোতাবেক রেশন দিতে গেলে বিক্ষোভ দেখান পরিযায়ী শ্রমিকরা। বিক্ষোভের জেরে বন্ধ করে দিতে হয় রেশন দেওয়া। জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি বলেন, “হ্যাঁ, সবংয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকেই এই অভিযোগ আসছে। ব্লক প্রশাসন খতিয়ে দেখে আসল গ্রাহকদের রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা করুক। পরিযায়ীদের জন্য বরাদ্দ রেশন পরিযায়ী নয় এমন মানুষ কেন পাবেন?”

RELATED ARTICLES

Most Popular