নিজস্ব সংবাদদাতা: ভেবে ছিলেন হাসপাতালে গেলে করোনা হয়ে যাবে তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ বাদ দিয়ে নিজের মত করেই থাকছিলেন কিন্তু করোনা রেহাই দিলনা তাঁকে। ১২ঘন্টা পের হয়নি করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গেছে সবংয়ের প্রথম মৃত্যুর, শনিবার ভোর রাতের সেই ঘটনার পর সন্ধ্যায় ফের দুঃসংবাদ আছড়ে পড়ল সবংয়ে। শনিবার রাতে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী সবংয়ে ফের ২জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আর এই দুজনের মধ্যে ১জন আবার সবং হাসপাতাল মোড়ে একটি ওষুধ দোকানের কর্মচারী বলে জানা গেছে। যাঁকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া স্বত্ত্বেও নিজের মত করে ছিলেন কারন তাঁর ধারনা ছিল হাসপাতালে ঢুকলেই করোনা হয়ে যাবে!
এমনিতেই আক্রান্তের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ার মুখে স্থানীয় ভাবে লকডাউন চলছে কিন্তু তা স্বত্তেও জরুরি পরিষেবা হিসাবে চালু ছিল ওষুধ দোকান। সেই ওষুধ দোকানের কর্মচারী আক্রান্ত হওয়ায় এবার দুশ্চিন্তার ভাঁজ প্রশাসনের কপালে। জানা গেছে এলাকার মধ্য বয়স্ক এই ব্যক্তি কয়েকদিন জ্বর নিয়ে ভুগছিলেন। এরপরই ওই ব্যক্তি সবং গ্রামীন হাসপাতালে নিজের নমুনা দিয়েছিলেন। ১২ নম্বর বুড়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের রামভদ্রপুরের ওই বাসিন্দা ৩০জুলাই নমুনা দিয়েছিলেন, ১ আগষ্ট তার পজিটিভ ফল আসে। কি ভাবে ওই ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন তা অনুমান করতে গিয়ে এক স্বাস্থ্য কর্তা জানিয়েছেন, হাসপাতালের লাগোয়া বলরামপুর এলাকায় ২জনের করোনা ধরা পড়েছে যার মধ্যে ১জন ওই ওষুধ দোকানে গেছেন এবং ওষুধ নিয়েছেন কিছু দিন আগেই। ঘটনা হচ্ছে যে পাড়ায় সংক্রমন ছড়িয়েছে ঠিক তার উল্টো দিকেই এই ওষুধ দোকান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে জ্বর হওয়ার পরেই ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি হতেও বলা হয়েছিল কিন্তু হাসপাতালে ঢুকলে করোনা হয়ে যাবে এই ভয়ে সে হাসপাতালে না গিয়ে ওষুধ দোকানের পেছনে থাকত। গত মঙ্গলবারের পর থেকে সে দোকানে কাজ করেনি এমনটাই দাবি করা হয়েছে যদিও তাতে করেও দোকান থেকে সংক্রমন ছড়ায় নি এমন দাবি করা যায়না।
শনিবার সবংয়ের দ্বিতীয় আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়ে সমস্যায় পড়েছে পুলিশ কারন তাঁর ফোন নম্বরটি অচল। মাত্র ১৪বছরের ব্যক্তি বলা হচ্ছে ওই আক্রান্তকে। সবংয়ের দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েতের বেনেদীঘি এলাকায় ১৪বছরের বয়স ওই নামে কাউকে পাওয়া যাচ্ছেনা। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান বয়স ভুল দেওয়া হয়েছে। ওই অঞ্চলে ওই নামে খোঁজ মিলেছে বছর ৪১ য়ের এক ব্যক্তির। এই ব্যক্তি পেশায় পশু চিকিৎসক যিনি গলা ব্যথা থাকায় নিজের নমুনা দিয়ে এসেছিলেন হাসপাতালে। গৃহ পালিত পশুর চিকিৎসার কারনে এদিক ওদিক যেতে হয় তাঁকে। ফলে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থেকেই যাচ্ছে।
সম্ভবত এই ব্যক্তির বয়সের সংখ্যা লেখার সময় উল্টে গিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। যদিও এটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গিয়েছে।
শনিবার মৃত রেশন ডিলার আর এই দুই আক্রান্ত নিয়ে সবং থানা এলাকায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৫জন হয়ে গেল। অন্যদিকে এই পঞ্চায়েত সমিতির যে ৭টি অঞ্চলে করোনা প্রবেশ করেছিল তার বাইরে বুড়াল গ্রাম পঞ্চায়েত যুক্ত হয়ে ৮ টি অঞ্চল আক্রান্তের তালিকায় চলে এল। এখনও অবধি মাত্র ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতে করোনা আক্রমনের বাইরে রইল।