Homeএখন খবরসংক্রমন শঙ্কায় সবং হাসপাতাল! আক্রান্ত সাফাইকর্মী কাম চায়ের দোকানি সহ আরেক স্বাস্থ্যকর্মী,...

সংক্রমন শঙ্কায় সবং হাসপাতাল! আক্রান্ত সাফাইকর্মী কাম চায়ের দোকানি সহ আরেক স্বাস্থ্যকর্মী, হাসপাতাল পাড়ায় একাধিক ঘরে করোনার উপসর্গ

নিজস্ব সংবাদদাতা: বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী সবং থানায় এলাকায় নতুন করে ৪ আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে যার মধ্যে ২ জনের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা রীতিমত উদ্বেগের কারন গ্রামীন হাসপাতাল লাগোয়া যে এলাকায় এই সংক্রমনের লক্ষন মিলেছে সেখানকার অধিকাংশ ঘরেই জ্বর অথবা করোনার অন্যান্য উপসর্গ দেখা যাচ্ছে আর সংক্রমিত এই এলাকার ২জন স্থায়ী, ৫ জন অস্থায়ী সাফাই কর্মী এবং ২ জন আ্যম্বুলেন্স মালিক কাম চালক সবং হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত।

এই এলাকাটি যা বলরামপুর নামে পরিচিত এখানকার আক্রান্ত যুবক ও কিশোরী সম্পর্কে মামা ভাগ্নি। ৩৪ বছরে মামা সবং গ্রামীন হাসপাতালের অস্থায়ী সাফাই কর্মী অন্য দিকে আক্রান্ত ১৫বছরের কিশোরীর মা হাসপাতালের অস্থায়ী সাফাই কর্মী। এছাড়া ওই যুবকের দাদাও অস্থায়ী সাফাই কর্মী যিনি সপরিবারের গা হাত পায়ে ব্যথা অনুভব করছেন।  অন্যদিকে আ্যম্বুলেন্স চালকদের একটি পরিবারে বেশ কয়েকদিন ধরেই জ্বর চলছে। যে যুবক বৃহস্পতিবারের রিপোর্টে পজিটিভ বলে ধরা পড়েছেন, তিনি গত ৯ দিন ধরে জ্বরে ভোগার পর ২৮ তারিখ নমুনা দেন যা শুক্রবার পজিটিভ আসে। আক্রান্ত দুই স্বাস্থ্যকর্মীর বক্তব্য তাঁদের সংক্রমনের উৎস হাসপাতালই কারন হাসপাতালে অন্তত ৪ জন সক্রিয় কোভিড পেশেন্ট ছিল। হাসপাতালের সাফাই কর্মীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়না যে কারনে ওই রোগীদের সংস্পর্ষে এসে এটা হয়েছে।

যদিও সবং বিএমওএইচ ডক্টর সুভাষ কান্ডার জানিয়েছেন, “দুবার দমকল বিভাগের কর্মীরা এসে স্যানিটাইজ করেছেন। এরপরও আমরা নিজস্ব মেশিন দিয়ে প্রতিদিনই স্যানেটিজেশন করা হচ্ছে।”
কিছুদিন আগেই হাসপাতালে একেক করে চার আক্রান্ত ধরা পড়ায় হাসপাতালের নমুনা সংগ্ৰহ করে পাঠানো হয়েচিল। তাঁরা নেগেটিভ এসেছিলেন ঠিকই তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে হাসপাতালের অন্দর মহলে করোনা চলে আসায় ২৬জন নার্স ১৫ জন চুতর্থ শ্রেণীর কর্মী, ৫জন চিকিৎসক ও ২জন সাফাই কর্মীর নতুন করে নমুনা সংগ্রহ করা হবে বলে বিএমওএইচ ডক্টর কান্ডার জানান। কান্ডার বলেছেন,”ফের দমকল বিভাগের কথা বলা হচ্ছে পুরো হাসপাতাল চত্বর স্যানেটাইজ করা হবে।”

ইতিমধ্যেই আক্রান্ত এলাকাটি থেকে র‍্যানডাম বা নির্বিচারে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সবং স্বাস্থ্য বিভাগ। শুধু ওই এলাকা থেকেই বুধ ও বৃহস্পতিবার ১৫ জনের নমুনা নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার আরও বেশি নেওয়া হবে বলে জানালেন এক আধিকারিক। ফলে আরও বেশ কিছু পজিটিভ আসার সম্ভবনা থেকে যাচ্ছে। এদিকে সবংয়ের আরও বেশি চিন্তার কারন হল আক্রান্ত এক সাফাইকর্মী ও উপসর্গ যুক্ত এক সাফাইকর্মীর হাসপাতালের সামনেই চায়ের দোকান থাকায় কারা কারা ওই চায়ের দোকানে চা খেতে আর আড্ডা মারতে যেতেন তাঁদের নিয়ে। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আক্রান্ত হয়ে পড়লে সে সংক্রমন কতদুর অবধি ছড়ায় তা এখন দুশ্চিন্তার।

সবংয়ের বাকি ২ আক্রান্ত সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। বর্তমানে হরিরহাট এলাকায় মহিলার বাপের বাড়িতে এসে রয়েছেন। বিহার থেকে আগত এই পরিবারের কর্তা একজন বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী। সম্ভবত: বিহার থেকেই সংক্রমন নিয়েই এসেছেন। নিজের গ্রামের পরিবর্তে হরিরহাটের শ্বশুরবাড়িতে ওই যুবক সস্ত্রীক উঠেছিলেন কারন শাশুড়ি একজন স্বাস্থ্যকর্মী হওয়ার সুবাদে দ্রুত পরীক্ষার সুযোগ পাওয়া যাবে এই আশা নিয়েই। তাঁদের সেই আশা পূরণ হল ঠিকই কিন্তু সবংয়ের ঘাড়ে দুই বহিরাগত সংখ্যা যুক্ত হল।

এদিকে সব মিলিয়ে সবং থানা এলাকায় মোট আক্রান্তর সংখ্যা ২২ জনে দাঁড়াল। যার মধ্যে প্রায় ৫০% করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন। সবং পঞ্চায়েত সমিতির ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টিতে করোনা সংক্রমনের লক্ষন পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবারের আগে অবধি ৭টি মামলা নিয়ে দেভোগ গ্রাম পঞ্চায়েতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি ছিল কিন্তু বুধবার সর্বমোট ৮ আক্রান্ত নিয়ে সবং গ্রাম পঞ্চায়েত এগিয়ে রইল আর আশঙ্কা এটাই যে সবং সদরে এই সংক্রমন আরও বাড়তে চলেছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular