ওয়েব ডেস্ক : সোমবার পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের সেকচক গ্রামের বছর কুড়ির কলেজ ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এখনও তোলপাড় গোটা গ্রাম। প্রতিবেশীদের দাবি সম্পত্তি গত কারণে তরুণীর বাবা ও সৎ মা-ই তাকে খুন করেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে তরুণীর সৎ মা ও বাবাকে। কিন্তু দিন যত যাচ্ছে ততই ধীরে ধীরে কাটছে তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর জট৷ তবে সূত্রের খবর, খুন নয় বরং আত্মহত্যা করেছে ওই তরুণী।
জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন যাবৎ একটি ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন শ্রাবণী দাস নামে ওই তরুণী। সম্প্রতি সে কথা জানতে পারেন তার বাবা৷ কিন্তু ছেলেটি বেকার হওয়ায় বাবা সম্পর্কটি মানতে চাননি। এই নিয়ে কয়েকদিন যাবত বাড়িতে ব্যাপক অশান্তি হয়। এদিকে শ্রাবণীর বাবা মনে করেন মেয়েকে ঠিক রাস্তায় ফেরানোর একমাত্র পথ তাকে বিয়ে দেওয়া। সেই অনুযায়ী অন্য জায়গায় মেয়ের বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাবার কথা মানতে রাজি না হওয়ায় সোমবার রাতে বাবা তাকে বকাবকি করে। সেই কারনেই সোমবার গভীর রাতে পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে শ্রাবণী।
যদিও ঘটনার তদন্তে নেমে প্রতিবেশীদের তরফে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গিয়েছে। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, বিষয় সম্পত্তি নিজেদের হাতে রাখতে সৎ মায়ের প্ররোচনায় জোড় করে নিজেদের পছন্দ করা ছেলের সাথে শ্রাবণীর বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন বাবা চন্দন দাস ও সৎমা সোমারানী জানা দাস। কিন্তু শ্রাবণী তাতে রাজি না হওয়ায় সম্পত্তি হাতাতে তার ওপর অত্যাচার করে তাকে শ্বাসরোধ করে পুকুরে ফেলে দেয় বাবা ও সৎ মা।
এদিকে অন্য পক্ষের দাবি, শ্রাবণীর বাবার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সৎমা হলেও অত্যন্ত ভালো মানুষ। তাঁর নিজের কোনও সন্তান নেই শ্রাবনী এবং তাঁর ছোট ভাইকে তিনি যথেষ্টই ভালবাসতেন। সৎমা সোমা শ্রাবণীকে নিজের মায়ের মতই ভালোবাসতেন এমনকি শ্রাবণীর সাথে তার সৎ মায়ের সম্পর্কও ভালো ছিল। এবিষয়ে শ্রাবণীর দাদু জানান, কয়েকজন প্রতিবেশী তাদের পরিবার সম্পর্কে ভুয়ো মন্তব্য ছড়াচ্ছেন। তিনি তার নাতনির নামে কোনো সম্পত্তিই লিখে দেননি।
পুলিশ জানিয়েছে প্রতিবেশীদের চাপের মুখে পড়ে শ্রাবণীর বাবা ও মায়ের প্রান বাঁচাতেই তাদের বাধ্য হয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ না হলে হয়ত প্রতিবেশীদের রোষের মুখে পড়ে দুজনকে চরম হেনস্থা হতে হত। হয়ত মারধর করা হত। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এমনটা মনে হয়েছে যে তাঁরা খুনে জড়িত নন। তবে নিশ্চিত হতে আরও জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।