ওয়েব ডেস্ক : দিন কয়েক আগেই বিহারে শেষ হয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। কিন্তু শেষমেশ পুনরায় নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন নীতিশ কুমার। এদিকে নির্বাচনে খারাপ ফল করার জন্য এই প্রথম প্রকাশ্যে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুখ খুলল মহাগঠবন্ধন শরিক আরজেডি। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার বিষয়ে রাহুল গান্ধীকেই দায়ী করলেন দলের বর্ষীয়ান নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি। পাশাপাশি তাঁর, বিহার নির্বাচনের সময় সেখানে অনুপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধী। তাঁর আরও অভিযোগ, একদিকে যখন বিহারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে, সেসময় বোন তথা উত্তর প্রদেশের দায়িত্বে থাকা এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরার শিমলার বাড়িতে ছুটি কাটাতে ব্যস্ত ছিলেন রাহুল গান্ধী।
এদিকে বিহারে তিন দফার বিধানসভা নির্বাচনে ৭০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ১৯টি আসন। এর জেরে ইতিমধ্যেই আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্দরে স্বাভাবিকভাবেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, কংগ্রেসের খারাপ ফলের কারণেই সামান্য ব্যবধানের জেরে এনডিএ-র কাছে হার স্বীকার করতে হয়েছে। তিওয়ারির অভিযোগ, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চেয়ে বয়সে অনেক ছোট রাহুল গান্ধী। কিন্তু রাহুলের চেয়ে অনেক বেশি সংখ্যক প্রচারসভা করেছেন মোদী। আসন বণ্টনের সময় কংগ্রেস ৭০টি আসন চেয়ে নিয়েছিল। কিন্তু তার জন্য ৭০টি প্রচারসভাও তারা করেনি। এতগুলি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিহার বিধানসভা নির্বাচনে যথেষ্ট চেষ্টা করেনি কংগ্রেস। নির্বাচনের সময় রাহুল শিমলায় তাঁর বোনের বাড়িতে পিকনিক করছিলেন। এ ভাবে কি কোনও দল চালানো যায়? দল পরিচালনায় কংগ্রেসের গুরুত্বহীন প্রচেষ্টার জেরে ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে যে প্রকারান্তরে বিজেপি-কেই তারা সাহায্য করেছে।”
তবে শুধুমাত্র রাহুল গান্ধী নয়, একই সাথে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর বিরুদ্ধেও একাধিক মন্তব্য করেম প্রাক্তন আরজেডি সাংসদম তাঁর অভিযোগ, “সম্প্রতি উত্তর প্রদেশে চার আসনে উপ-নির্বাচনে সাতটি আসনের মধ্যে চারটিতেই জমানত জব্দ হয় কংগ্রেসের। এ ভাবেই উত্তর প্রদেশে দলের দায়িত্ব পালন করেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।” পাশাপাশি এদিন তিনি বলেন, “আমরা এক শক্তিশালী কংগ্রেসকে দেখতে চাই। আজ গণতন্ত্র বিপন্ন। বিশেষ করে বিজেপি-র শাসনে দেশে বিপুল হারে নাগরিকের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। কিন্তু আমার বিশ্বাস, পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য নিজের সর্বশক্তি প্রয়োগ করছে না কংগ্রেস। দল হিসেবে কংগ্রেসের উচিত বিজেপি-র কাছে জোট রাজনীতি সম্পর্কে শিক্ষা নেওয়া। বিহার নির্বাচনে জোটসঙ্গীর প্রতি সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করেছে কেন্দ্রের শাসকদল। জেডি-ইউ মাত্র ৪৩টি আসন পেলেও নীতীশ কুমারকেই মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসাতে রাজি হয়েছে বিজেপি।”
এদিকে আরজেডির পাশাপাশি বিহার বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পরাজয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আর এক মহাগঠবন্ধন শরিক সিপিআইএমএল। এবিষয়ে সিপিআইএমএল-এর সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, “কংগ্রেসের খারাপ ফলের জন্য দায়ী ভুল প্রার্থী নির্বাচন এবং প্রচারে যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ না করা। নিজেদের খামতিগুলি তাদের খতিয়ে দেখা উচিত।”