নিজস্ব সংবাদদাতা: নিজের বাড়িতেই দিনের বেলায় খুন হলেন এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। ভারি কোনো বস্তু দিয়ে শিক্ষিকার মাথায় আঘাত করা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে প্রাথমিকভাবে।পুলিশ জানিয়েছে সোমবার দুপুরে হলদিয়ার সুতাহাটা থানার চৈতন্যপুরের ভূপতিনগর এলাকার ঘটনা। মৃত শিক্ষিকার নাম রাসমণি দে কাঞ্জিলাল(৭০)। সুতাহাটা লাবণ্যপ্রভা বালিকা বিদ্যালয়ের অঙ্কের শিক্ষিকা ছিলেন তিনি।
সোমবার বেলা ৩টা নাগাদ বাড়ির পরিচারিকা এসে দেখতে পান ঘরের মধ্যে গম এবং অন্যান্য জিনিসপত্র এদিক-ওদিক ছড়ানো। রয়েছে সবজি কাটা। পাশেই রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে রয়েছেন রাসমণিদেবী। ঘর ভেসে যাচ্ছে রক্তে। পরিচারিকাই চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডাকেন। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এরপরই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সুতাহাটা থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনা খুন বলেই মনে করছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে গলার নলি কেটে খুন বলেই মনে করা হয়েছিল। কিন্তু পরে বোঝা যায় মাথার পেছনের অংশ থেকে প্রচুর রক্ত গড়িয়ে গলার কাছে জমা হয়েছে।
সুতাহাটা থানার ওসি স্বপন চাবড়ি বলেন,’বৃদ্ধাকে খুনই করা হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, চাকরি সূত্রে বাইরে থাকেন বৃদ্ধার দুই ছেলের একজন খড়গপুরে অন্যজন কলকাতায় থাকেন। তিনতলা বিশাল বাড়ির নিচেরতলার একটি ঘরে থাকতেন রাসমণিদেবী। বাকি সব ঘরে ভাড়াটিয়া থাকেন। এদিন দুপুরে বাড়ির বাইরে রাসমণিদেবীকে গম, ছোলা শুকোতে দিতে দেখেছিলেন প্রতিবেশীরা। আনুমানিক বেলা ২টা নাগাদ জানা যায় খুন হয়েছেন তিনি।
মহিষাদল-হলদিয়া রাজ্য সড়কের চৈতন্যপুর মোড়ের কাছাকাছি একটা বড় গলির মধ্যে শিক্ষিকার বাড়ি। উঁচু প্রাচীর রয়েছে বাড়ির চারপাশে। সামনে ও পাশে রয়েছে একাধিক বাড়ি। তারমধ্যে এরকম ঘটনা অবাক করেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। বৃদ্ধা সুদে টাকা খাটাতেন বলে একটি সূত্রে জানা গেছে। সেই সূত্রে কিছু লোকজন যাতায়ত করত মাঝে মধ্যে। পাওনা টাকা নিয়ে কোনও গন্ডগোল হয়েছিল কী? পুলিশ বৃদ্ধার মোবাইলটি খতিয়ে দেখছে বলেও জানা গিয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ঘটনায় হতভম্ব তাঁরা। ঘন্টা খানেক আগেও তাঁরা বৃদ্ধাকে দেখেছেন বাইরে। তারই মধ্যে এই ঘটনা। পরিচারিকা যখন আসেন তখন ঘরের সামনের দরজা খোলাই ছিল। বৃদ্ধাকে ডাকাডাকি করে না পেয়ে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করেই ঘটনাটি দেখতে পেয়ে পরিত্রাহি চিৎকার করে সে। এরপরই ছুটে আসে প্রতিবেশীরা। খবর যায় পুলিশে।