নিউজ ডেস্ক: তাঁর ঠিকানা এখন না ফেরার দেশ। শোকে পাথর তাঁর গুণমুগ্ধরা। চলতি মাসের ১২ তারিখ করোনার উপসর্গ শুরু হয় কবি শঙ্খ ঘোষের। জ্বর আসে। বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত সমস্যাতেও ভুগছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত আজ সকালে ৯০ বছর বয়সে নিজের বাড়িতেই প্রয়াত হলেন কবি। কোভিড সংক্রমণ ধরা পরার পর ঝুঁকি না নিয়ে বাড়িতেই রাখা হয়েছিল তাকে। যদিও সেই সময় তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানানো হয়েছিল।
কবির পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার শঙ্খ ঘোষের করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপর বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলতে থাকে। তবে জীবনানন্দ পরবর্তী পঞ্চপাণ্ডবের শেষ সৈনিকও করোনার শিকার হয়ে বিদায় জানালেন বাংলা সাহিত্য জগতকে। কবির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর থেকে ছিলেন পুরোপুরি আইসোলেশনে। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ করেই তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। সকালে তাঁকে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হলেও না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রিয় কবি।
সূত্রের খবর, কবির স্ত্রী, কন্যা ও জামাতাও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কবিকে হারিয়ে কবির স্বজন সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছেন পাঠক-পাঠিকারা।
উল্লেখ্য, ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের চাঁদপুরে জন্ম হয় শঙ্খ ঘোষের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে অধ্যাপনা করেছেন তিনি। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ’, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ প্রমুখ। ‘বাবরের প্রার্থনা’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তাঁকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরষ্কার ‘সাহিত্য একাদেমি’তে সম্মানিত করা হয়। এছাড়াও ‘ধূম লেগেছে হৃৎকমলে’ কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯৮৯ সালে রবীন্দ্র পুরষ্কার, ১৯৯৯ সালে কন্নঢ় ভাষায় লেখা নাটক অনুবাদের জন্য দ্বিতীয়বার সাহিত্য অ্যাকাডেমি সম্মান পান তিনি। ১৯৯৯ সালেই দেশিকোত্তম সম্মানে ভূষিত করা হয় তাঁকে। এরপর ২০১১ সালে পান পদ্মভূষণ সম্মান। ২০১৬ সালে জ্ঞানপীঠ পুরষ্কারও ছিল কবির ঝুলিতে।