Homeএখন খবরপ্রেমিকার বাড়ির সামনেই গেঞ্জিতে গলা জড়িয়ে গাছে ঝুলছে পিংলার যুবক, অদ্ভুদ ফাঁসি...

প্রেমিকার বাড়ির সামনেই গেঞ্জিতে গলা জড়িয়ে গাছে ঝুলছে পিংলার যুবক, অদ্ভুদ ফাঁসি দেখে হতবাক সবং! পেছনে কী ত্রিকোণ প্রেমের চিত্রনাট্য

শশাঙ্ক প্রধান: দড়ি নয়, গামছা নয়, শাড়ি কিংবা ধুতিও নয়, পরনের টি-শার্ট বা গেঞ্জি দিয়ে গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস আঁটা যুবক সরল বৃক্ষ থেকে ঝুলছে! পরনে জিন্স, কোমরে চামড়ার বেল্টের ঝকঝকে বকলস থেকে ঠিকরে পড়ছে সকালের রোদ। যুবক ঝুলছে নিজের বাড়ি থেকে ৬ কিলোমিটার দুরে প্রেমিকার বাড়ির সামনে!

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে মৃত যুবকের নাম রাজু দুয়া। ৩১ বছরের রাজুর বাড়ি পিংলা থানার নাড়াথা এলাকার। ৬ বছর আগে বিয়েও হয় তার এবং একটি ৪ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। যদিও যুবকের স্ত্রী যুবকের সঙ্গে থাকতনা। মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকে কারন যুবক বিয়ের আগে থেকেই সবং থানার ভেমুয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের লাউবাড় গ্রামের এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিল। ওই মহিলার স্বামী আবার স্ত্রীর এই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কারণেই তাঁকে ছেড়ে গেছেন বলে জানা গেছে। এই লাউবাড় গ্রামেই যুবকের প্রেমিকার বাড়ি থেকে ১০০মিটার দুরে একটি ফাঁকা জায়গায় সেচ খালের পার্শ্ববর্তী পেয়ারা গাছ থেকে শনিবার সকালে উদ্ধার হয় রাজুর ঝুলন্ত দেহ।

লাউবাড় গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গ্রামের কয়েকজন ভোর বেলায় চাষের জমি পরিচর্যার জন্য মাঠে যাচ্ছিল তারাই প্রথম দেখতে পায় রাজুর দেহ। তারাই প্রথম খবর দেয় স্থানীয় পঞ্চায়েতকে। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে খবর যায় পুলিশে। তারপরই পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে দেহ পাঠানো হচ্ছে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানেই ময়নাতদন্তের পর দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে। লাউবাড় গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, ‘রাজুকে আমরা ভালভাবেই চিনতাম কারন ও প্রায় সময় এই মহিলার কাছেই থাকত এমনকি রাত কাটাতো এখানেই।”

রাজুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে তার মামার বাড়ি ওই লাউবাড় গ্রামেরই পার্শ্ববর্তী কোটবাড় গ্রামে। মামাবাড়িতে যাতায়ত করার সুবাদে বেশ কয়েকবছর আগে থেকেই ওই মহিলার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে প্রেমের সম্পর্কে তখন রাজুর বিয়ে হয়নি। এই সম্পর্ক থেকে বের করে আনতেই পিংলা থানার যশোরাজপুরের এক তরুণীর সাথে বিয়ে দেওয়া হয় তার। যদিও সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। রাজু এই মহিলার আসক্তি থেকে বের হতে পারেনি। ফলে পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। রাজু তখন মহারাষ্ট্রের পুনেতে পরিযায়ী শ্রমিক।

পিংলার কিছু মানুষের দাবি লকডাউনের পর রাজু বেশ কিছু টাকা পয়সা নিয়ে এসেছিল এবং তার সবটাই ওই মহিলার পেছনেই খরচ করেছে। এখন পয়সা শেষ হয়ে যাওয়ার পর রাজুকে আর পাত্তা দিচ্ছিলনা। ইতিমধ্যে অন্য একজনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় এই মহিলার তাই নিয়ে রাজুর সঙ্গে মনোমালিন্য তৈরি হয়। শুক্রবার অর্থাৎ গতকাল বিকালে লাউবাড় গ্রামেই কিছু যুবকের সাথে রাজুর ঝামেলা হয়। রাতে তারাই রাজুকে মেরে ঝুলিয়ে দিতে পারে। পুলিশ অবশ্য এখনও এনিয়ে মুখ খোলেনি। পুলিশ অপেক্ষা করছে রাজুর পরিবারের অভিযোগের জন্য।

বিষয়টি নিয়ে আবার পিংলা ও সবংয়ের স্থানীয় পঞ্চায়েত তৎপর হয়ে উঠেছে। পিংলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে বাইরে কাজ করার সুবাদে রাজু যে পয়সা উপার্জন করত তা ওই মহিলার পেছনেই ঢালত এটা ঠিক। এর আগে মহিলাকে নিয়ে রাজু দিঘা পালিয়েছিল। তখন ওই মহিলার স্বামী পুলিশের দ্বারস্থ হয়। পুলিশ রাজুকে গ্রেপ্তার করে। রাজু ২মাস জেলেও থাকে। জামিন পেয়ে ফের মহিলার কাছেই যায়। এরপরই মহিলার স্বামী তাকে ছেড়ে যায়। তারপর থেকে রাজু ওখানেই থাকত। তবে রাজুর সঙ্গে মহিলার সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল কিনা, দুজনের সম্পর্কের মধ্যে তৃতীয় কেউ প্রবেশ করেছিল কী না এসব জানার চেষ্টা করছে সবং পুলিশ। আপতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় আনা হয়েছে। এবার দেখার ‘এক ফুল, দো মালি’র কোনও গল্প রয়েছে কী না।

RELATED ARTICLES

Most Popular