নিজস্ব সংবাদদাতা: তাঁদের কোনও সন্তান ছিলনা থাকার মধ্যে শুধুই একটি পোষ্য কুকুর। সেই পোষ্যর অস্বাভাবিক আচরন দেখে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে প্রতিবেশিরা লক্ষ করেন গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছেন স্বামী এবং স্ত্রী। বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার নুঙ্গির মোল্লাপাড়ায় ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পুলিশ দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন মহেশতলা পুরসভার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা সন্তোষ দেব ও রূপালি দেব। নিঃসন্তান ওই দম্পতির একটি পোষা কুকুর ছিল। এদিন সকালে কুকুরটি হঠাৎই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। তা নজরে পড়তেই প্রতিবেশীরা দেব দম্পতিকে সচেতন করতে তাঁদের বাড়ি যান।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
সেখানে গিয়েই তাঁরা দেখেন ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। জানলার পর্দা সরাতেই তাঁরা দেখতে পান, একই ওড়নায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন ওই দম্পতি। তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেওয়া হলে, দরজা ভেঙে তাঁরা দেহদুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারে কয়েক লক্ষ টাকার দেনা হয়ে যাওয়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই দম্পতি।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
স্থানীয় এক প্রতিবেশি জানিয়েছেন, ” ওই কুকুরটিকে সন্তান স্নেহেই প্রতি পালিত করতেন দম্পত্তি। বুধবার সকালে সেই কুকুরটাকে দেখি, কখনও কেঁউ কেঁউ করে কাঁদছে। কখনও মাটিতে গড়াচ্ছে, কখনও আবার পথচারিদের দিকে দৌড়ে যাচ্ছে। আমরা ভাবলাম ওরই কোনও সমস্যা হচ্ছে। বাড়ির বাইরে ওই দম্পত্তির কাউকেই দেখতে না পেয়ে ওঁদের ডাকার জন্য ঘরের দিকে যাই। দেখি দরজা তখনও বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরেও সাড়া না পেয়ে জানালার একটা অংশ কোনও মতে ফাঁক করে দেখি এই মর্মান্তিক অবস্থা।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
মৃত সন্তোষবাবুর দাদা দিলীপ দেব জানান, বছর কুড়ি আগে বিয়ে হয় তাঁদের। প্রথমে সবজি বিক্রি করে সংসার চালাতেন ওই দম্পতি। পরে সেই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠী ও পাড়ার লোকজনদের কাছ থেকে দেনা করে সংসার চালাতেন তাঁরা। বহুবার আর্থিকভাবে দিলীপবাবুও তাঁদের সাহায্যও করেছিলেন।তাঁদের পক্ষে এভাবে আর প্রতিনিয়ত আর্থিক সাহায্য করা সম্ভব হচ্ছিল না।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসখানেক ধরে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লোকজন তাঁদের লোনের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ওই টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল তাঁদের। অনুমান, সেই কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন ওই দম্পতি। জানা গিয়েছে, দম্পতির দেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে। পোষ্যটিকে স্থানীয়রাই দেখভালের দায়িত্ব নেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে ঘটনার পর থেকে এখনও কুকুরটি কিছুই খায়নি বলে জানা গেছে।