নিজস্ব সংবাদদাতা: আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র তথা প্রাক্তন তৃনমূল নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারীর বিজেপিতে যোগদানের পর থেকেই শাসকদলে বড়সড় ধাক্কা লেগেছে ওই এলাকায়। শুধু তেওয়ারী একাই নন ভেতরে ভেতরে জামা বদলে ফেলেছেন শাসকদলের অনেক নেতাকর্মীই। ফলে খনি শহরের কয়েকটি বিধানসভায় তাদের অনায়াস জয় বলে ধরে নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু হিসাব বদলে দিয়েছে সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী ঐশী ঘোষ। তাঁর তীক্ষ্ণ মেধাবী বক্তব্য ফালফাল করে দিচ্ছে বিজেপির আসল পরিবর্তনের প্রচার। জেএনইউর প্রাক্তন নেত্রী তুলে আনছেন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বেহাল দশা। আর সেই সব রাজ্যে বিজেপি কেমন সোনার রাজ্য গড়েছে তার আঁখো দেখা হাল তুলে ধরছেন নিজের প্রচারে। আর এতেই নাকি জামুড়িয়া কেন্দ্রে প্রমাদ গুনছে বিজেপি। এমনটাই দাবি স্থানীয় সিপিএম নেতাদের। সিপিএমের অভিযোগ যে কারনে তৃনমূলের পরিবর্তে ঐশীকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছে গেরুয়া শিবির। নোংরা ও কুৎসিত প্রচারের পাশাপাশি এবার ঐশীর সভা পন্ড করার চেষ্টার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে।
জানা গেছে মঙ্গলবার রাতে জামুড়িয়ার নিউ সাতগ্রাম এলাকায় সভা করছিলেন ঐশী ঘোষ। সেই সময়ই সভার কাজে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ বেশ কিছু বিজেপি কর্মী ওই সভার মধ্যে ঢুকে গিয়ে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে থাকে। সঙ্গে ঐশী ঘোষের নাম করেও কটূ কথা বলা হয় বলে অভিযোগ। যদিও পাল্টা হামলায় না গিয়ে সিপিএম নেতারা সভার কাজ চালিয়ে যান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সভায় থাকা বেশিরভাগ বাম সমর্থনও চেয়ার ছেড়েও ওঠেননি। গোটা বিষয়টাই মঞ্চ থেকে দেখছিলেন ঐশী। কোনও পাল্টা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না করতে পেরে কিছুক্ষণ পরেই ওই কর্মীরা সভাস্থল ছেড়ে চলে যায়।
এদিকে এই ঘটনার জেরে সিপিএম-এর তরফে জামুড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পাশাপাশি ঐশী ঘোষের নিরাপত্তা বাড়ানোর দাবিও তোলা হয়। সিপিএম-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পুলিশের অনুমতি নিয়েই সভা করা হয়েছে। যদিও এই ঘটনার সময় সেখানে থাকা পুলিশকর্মীরা এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে সিপিএম-এর তরফে।
এই ঘটনায় তিনি বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও এই গ্রেফতারির প্রতিবাদ করে জামুড়িয়ার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ চলে। থানার সামনে বসেই হয় বিক্ষোভ। মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতারের অভিযোগ তোলা হয়েছে বিজেপির তরফে। সিপিএম-এর তরফে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে, পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে বিজেপির তরফে।
ঐশীর বক্তব্য , তারা পুলিশের অনুমতি নিয়েই সভার কাজ করছিলেন। পাকিস্তানের এজেন্ট বলেও অভিযোগ তোলা হয়। পাশাপাশি তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অভিযোগও তিনি করেছেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে। ঐশী আরও জানিয়েছেন, অন্যদলের সভা পন্ড করার চেষ্টার মধ্যে দিয়ে বিজেপি তার নিজের চরিত্র স্পষ্ট করে দিয়েছে বিজেপি। এই অগণতান্ত্রিক চরিত্র বুঝিয়ে দেয় বিজেপি কতটা ফ্যাসিস্ট শক্তি।