ওয়েব ডেস্ক : সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি করছেন নেটিজেনরা। এরমধ্যে দিন কয়েক আগেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জানিয়েছিলেন, সুশান্তের বাবা চাইলে অভিনেতার মৃত্যুর তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়া হবে। এরপর সোমবারই একটি ভিডিওর মাধ্যমে সুশান্তের বাবা বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের কাছে ছেলের মৃত্যুর তদন্ত ভার সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার আবেদন জানান। এরপরই মঙ্গলবার নীতিশ কুমার জানান, “সুশান্তের পরিবার যেহেতু সিবিআই তদন্তের আরজি জানানোর জন্য বিহার সরকারকে সবুজ সংকেত দিয়েছে, তাই পাটনায় কৃষ্ণ কুমার সিংয়ের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই আমরা সিবিআই তদন্তের আরজি জানাচ্ছি।”
গত রবিবার সুশান্তের দিদি শ্বেতা সিং কীর্তি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে টুইট করে ভাইয়ের মৃত্যুর তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলেন। এরপর সোমবারই সুশান্তের বাবা সিবিআই তদন্তের দাবিকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। কিন্তু যেখানে সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই তার অনুরাগীরা সিবিআইয়ের দাবি তুলছেন, সেখানে দাঁড়িয়ে ছেলের মৃত্যুর প্রায় ৪৮ দিন কেটে যাওয়ার পর কেন এই দাবি তুললেন কেকে সিং? এই নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ছেলের এভাবে চলে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না সুশান্তের বাবা। কৃষ্ণ কুমার সিং আপাতত মেয়ের কাছেই রয়েছেন। ছেলে মারা যাওয়ার পর থেকেই শোক সইতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন কেকে সিং। তাই এতদিন পর এসব নিয়ে কথা বলছেন তিনি। এমনটাই জানিয়েছেন সুশান্তের পরিবার।
সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই বলিউডের অন্দরে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। এবার এই ইস্যুতে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে। দিন দুয়েক আগেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানিয়েছিলেন, “সুশান্তের বাবা কৃষ্ণ কুমার সিং যিনি পাটনার রাজীব নগর থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন, তিনি যদি নিজে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান, তাহলে এই বিষয়ে আলাদা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলবে বিহার সরকার।” এবার সুশান্তের বাবার সবুজ সংকেত মিলতেই সুযোগ বুঝে সুশান্তের মৃত্যুর তদন্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন জানালেন নীতীশ।
তবে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু নিয়ে নীতিশ কুমারের এত কৌতুহল ভালোভাবে দেখছেন না রাজনৈতিক মহলের অনেকেই। এবিষয়ে শনিবারই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, “সুশান্তের মৃত্যুটাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবেন না দয়া করে!”
উদ্ধব ঠাকরের এই কথায় মনে করা হচ্ছে, প্রথমত, কয়েকমাস পরেই বিহারের নির্বাচন। সমীক্ষা অনুযায়ী, নীতীশের জনপ্রিয়তা তুলনামূলক কমেছে। যাকে নড়বড়ে গদির ইঙ্গিত বললেও অত্যুক্তি করা হয় না! দ্বিতীয়ত, সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে মহারাষ্ট্র ও বিহারের মধ্যে রীতিমতো রেশারেশির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মনে করা হচ্ছে, ঘরের ছেলে সুশান্ত সিং রাজপুতকে নিয়ে যেহেতু বিহারবাসীর একটা আলাদা আবেগ রয়েছে, সেই কথা মাথায় রেখেই কখনও বিহার পুলিশের তৎপরতা আবার কখনও নীতিশ কুমারের গলায় সিবিআই তদন্তের আশ্বাস। অর্থাৎ মনে করা হচ্ছে, ঘরের ছেলে সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুকেই আসন্ন নির্বাচন জেতার একমাত্র হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।