Homeএখন খবরনন্দীগ্রামে মীনাক্ষীর রণকৌশল রচিয়তা নির্মল জানা প্রয়াত! দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আগেই করোনায়...

নন্দীগ্রামে মীনাক্ষীর রণকৌশল রচিয়তা নির্মল জানা প্রয়াত! দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার আগেই করোনায় প্রয়াত হলেন অবিভক্ত মেদিনীপুরের বাম নেতা

নিজস্ব সংবাদদাতা: চলে গেলেন নির্মল জানা, অবিভক্ত মেদিনীপুরের বাম আন্দোলনের পরিচিত মুখ প্রবীণ সিপিএম নেতা নির্মল ঘোষ। নন্দীগ্রামে তরুণ প্রার্থী মীনাক্ষী মুখার্জীর লড়াইয়ের ছক কষে দিয়েছিলেন এই প্রবীণ নেতাই। শনিবার ভোরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার চন্ডীপুর হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর। কিছুদিন আগেই করোনা প্রতিষেধকের প্রথম ডোজটি নিয়েছিলেন। দু-একদিনের মধ্যেই নেওয়ার কথা ছিল দ্বিতীয় ডোজ কিন্তু সে সুযোগ পেলেননা। তার আগেই মৃত্যু হল তাঁর। বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। রেখে গেলেন একমাত্র কন্যাকে।

তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই শোকের ছায়া ছড়িয়ে পড়ে দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে তাঁর পরিচিত মহলে। একসময় ছাত্র আন্দোলন থেকে মূল পার্টি সবটাই করেছেন অবিভক্ত মেদিনীপুরে। পরে জেলা ভাগের পর পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পদক মন্ডলীর সদস্যের দায়িত্ব সামলে আসছিলেন গত ১৯ বছর ধরে। শনিবার সেই অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল।

জানা গেছে দু-একদিন ধরেই সামান্য অসুস্থ বোধ করছিলেন তিনি। হালকা জ্বর হচ্ছিল। সর্দি এবং কাশি ছিল। শুক্রবারই আ্যন্টিজেন পরীক্ষা হয়েছিল এবং পজিটিভ ফলাফল আসে। চিকিৎসকরা আরটি/পিসিআর পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা হিসাবে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন কারন তাঁর কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা ছিল যা কিনা কিছুদিন আগেই চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে ফিরেছিলেন। শুক্রবার চণ্ডীপুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন কিন্তু শেষ রক্ষা হলনা। মাত্র কয়েকঘন্টার মধ্যেই সঙ্কটের মধ্যে চলে যান তিনি এবং শনিবার ভোরেই জীবনাবসান হয় তাঁর।

চলতি একুশের নির্বাচনেও দাপটের সঙ্গে কাজ করে গেছেন নির্মল জানা। তাঁর আদি বাড়ি নন্দীগ্রামের বিরুলিয়াতে। যে বিরুলিয়াতে প্রচারে গিয়ে আহত হয়ে মমতা ব্যানার্জী বর্তমানে হুইল চেয়ার ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। যেহেতু তাঁর বিরুলিয়াতে বাড়ি তাই এবার নন্দীগ্রামের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছিলেন তিনি। যেহেতু নন্দীগ্রামের মত জায়গা যেখানে তৃনমূল এবং বিজেপি উভয়েরই পেশি বল যথেষ্ট বেশি। পাছে এই এলাকা থেকে কাউকে নির্বাচনী এজেন্ট করলে তাঁর ওপর হামলা, ভয় ভীতি প্রদর্শন হতে পারে তাই পার্টি এই বর্ষীয়ান অকুতোভয় নেতাকেই এজেন্ট করেছিল। নির্বাচনী কর্মসূচি, একাধিক পদযাত্রায় অংশ নিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। যদিও তখন সংক্রমিত হননি তিনি। এরপর কী ভাবে তিনি সংক্রমিত হলেন সেটাই আশ্চর্যের। কিডনির মত জটিল রোগের কবল থেকে বেরিয়ে এলেও আসতে পারলেননা করোনার কবল থেকে।

সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি জানিয়েছেন, ” পার্টির বহু সঙ্কটপূর্ন মুহূর্তে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। ছাত্র আন্দোলন থেকে উঠে আসলেও পরবর্তীকালে তিনি কৃষক এবং শ্রমিক আন্দোলনে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অসংগঠিত ক্ষেত্রেও তিনি নেতৃত্বদানে অগ্রনী ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর প্রয়ান আমাদের কাছে মারাত্মক ক্ষতি যা কোনোদিনও পূরণ হওয়ার নয়।” দলীয় সূত্রে জানা গেছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারনে জেলা সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে জেলার দায়িত্ব সামলাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আজীবন পার্টির সর্বক্ষণের কর্মী হিসেবে কাজ করে গেছেন। কয়েকবছর আগেই এমনই এক এপ্রিলে স্ত্রী আভাকে হারিয়েছিলেন জানা।

RELATED ARTICLES

Most Popular