নিজস্ব সংবাদদাতা: তিহার জেলের প্রাচীর টপকে যেন করোনা ঢুকতেই পারেনি। সারা দেশ যখন হুমড়ি খেয়ে পড়েছে বৃহস্পতিবার রাত আটটায় করোনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর ভাষন শোনার জন্য তখন ব্যতিক্রম তিহার জেলের আধিকারিক থেকে প্রহরিরা। চার ধর্ষকের ফাঁসির মঞ্চ ঠিকঠাক আছে কিনা দেখে নেওয়া হচ্ছে। কারন আর মাত্র কয়েক ঘন্টা। আট বছরের অপেক্ষার অবসানে ২০ মার্চ, শুক্রবার সকাল সাড়ে পাঁচটায় ফাঁসি হবে নির্ভয়ার চার ধর্ষকের।
চার অপরাধীর সমস্ত আরজি খারিজ করে দিয়েছে দিল্লি পাতিয়ালা হাউস কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট। বহাল রেখেছে পুরনো মৃত্যু পরোয়ানাই। যদিও চার অপরাধীর একের পর এক আরজি ঘিরে দিনভর চলে টানাপোড়েন। সু্প্রিম কোর্ট পর্যন্ত মামলার জল গড়ায়। তবে দিনের শেষে কোনও আরজিই ধোপে টিকল না। পাতিয়ালা হাউস কোর্ট জানিয়ে দেয়, তিহার জেলে সকাল সাড়ে পাঁচটায় ফাঁসি হচ্ছেই।
চার দোষীর শেষ দাবি ছিল, “তাদের ফাঁসির দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক। কারণ এখনও আইনি বিকল্প পেতে পারে তারা।” কিন্তু তাদের আইনজীবীর দাবি উড়িয়ে দেন সরকারি আইনজীবী ইরফান আহমেদ। তাঁর কথায়, “বিপক্ষের আইনজীবী ১০০টা আবেদন করতে পারেন। কিন্তু ওই চারজনের সমস্ত আইনি বিকল্পের পথ বন্ধ।” রাষ্ট্রপতিও চারজনের আরজি খারিজ করে দিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টেও মুকেশ সিংয়ের আরজি পত্রপাঠ খারিজ করে দেওয়া হয়। তার দাবি ছিল, অপরাধ সংগঠিত হওয়ার সময় সে ঘটনাস্থলে ছিলই না। কিন্তু তার সেই আরজি সু্প্রিম কোর্টে ধোপে টেকেনি। এদিন পাতিয়ালা হাউস কোর্টে হাজির ছিলেন অপরাধী অক্ষয় সিংয়ের স্ত্রী। তিনি আবার আদালতের বাইরে জ্ঞান হারান। রায়দানের পর তিনি আত্মহ্ত্যারও হুমকি দিয়েছেন।
এদিনও চার অপরাধীর আইনজীবী এ পি সিং বলেন, “ওরা দেশের হয়ে কাজ করতে চায়। ওদের ফাঁসি দেবেন না। এদিকে আদালতের রায়ে খুশি নির্ভয়ার পরিবার।” প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ১৬ ডিসেম্বর দিল্লিতে চলন্ত বাসে এক মেডিক্যাল পড়ুয়াকে ধর্ষণ করে ছজন। তারপর দীর্ঘ আইনি চলে। এর আগে তিনবার মৃত্যু পরোয়ানা জারি হলেও শেষপর্যন্ত তা পিছিয়ে যায়। ২০ মার্চ অবশেষে ফাঁসি হবে চার অপরাধীর। এখন শুধুই ফাঁসির হাতলে জল্লাদের হাত পড়ার অপেক্ষা।