নিউজ ডেস্ক: “শীতলকুচিতে দুষ্টু ছেলেরা গুলি খেয়েছে। এই দুষ্টু ছেলেরা থাকবে না বাংলায়। জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে,“ রবিবার বরানগরের প্রচার সভা থেকে বিস্ফোরক বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শনিবার কোচবিহারের শীতলকুচিতে ভোট চলাকালীন কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে এনেই এদিন প্রচার সভা থেকে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘শীতলকুচিতে দুষ্টু ছেলেরা গুলি খেয়েছে। এই দুষ্টু ছেলেরা থাকবে না বাংলায়। কেউ আইন হাতে নিলে এটা সারা বাংলায় হবে। ১৭ তারিখও কেন্দ্রীয় বাহিনী বুথে থাকবে। কেউ বাড়াবাড়ি করলে, জায়গায় জায়গায় শীতলকুচি হবে।’ সেন্ট্রাল ফোর্স হাতে বন্দুক নিয়ে ঘুরতে আসেনি। কেউ লাল চোখ দেখাতে পারবে না বলেও এদিন হুঁশিয়ারি দেন দিলীপ।
শুধু বরানগর থেকেই নয়, এর আগেও শীতলকুচির ঘটনায় মমতাকে তীব্র আক্রমণ শানান দিলীপ ঘোষ। দিলীপ বলেন, “উনি পাপ করছেন, অন্যায় করছেন। মানুষকে উস্কে দিচ্ছেন। তার প্রচার বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ। মমতার বিরুদ্ধে মামলা করা উচিৎ।
তবে দিলীপ ঘোষের বরানগরের এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, এই মন্তব্য অত্যন্ত অসংবেদনশীল। এতে বিজেপির মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে। দিলীপের এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, দিলীপ ঘোষের কথার প্রতিক্রিয়া দেওয়া যায় না। এ ধরনের মন্তব্য করে আসলে বিভাজনের কৌশল নিয়েছেন। মানুষের দৈনন্দিন সমস্যার বিষয়গুলি থেকে নজর ঘোরাতেই দিলীপ ঘোষ এ ধরনের কথাবার্তা বলছেন বলে দাবী করেন সুজন চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ পর্যায়ের ভোট চলাকালে কোচবিহারের শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন মাথাভাঙ্গা-১ ব্লকের জোরপাটকি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫/১২৬ নম্বর মাদ্রাসা বুথে গুলি চলে। ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়৷ মৃতরা প্রত্যেকেই দলীয় কর্মী বলে দাবী তৃণমূলের। মৃতরা হামিদুল মিয়া, সামিউল হক, মনিরুল হক এবং আমজাদ হোসেন। ঘটনার পরেই ওই বুথে ভোট গ্রহণ পর্ব স্থগিত রাখা হয়। এই ঘটনা ঘিরে উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি।
শাসক শিবির এই ঘটনায় সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ইস্তফা দাবী করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল।
এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষও অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি, ওনার কথা না শুনলেই সে বিজেপি হয়ে যাবে। পুলিশও এখন বিজেপি হয়ে গেছে। পাল্টা পদ্ম শিবির এই ঘটনার জন্য তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উস্কানিমূলক মন্তব্যকে দায়ী করেছে। রাজ্যে ভোটের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এই ঘটনার জন্য মমতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন।