নিজস্ব সংবাদদাতা: যা কেবল পশ্চিমবঙ্গেই সম্ভব, ত্রান দিতে যাওয়া বা দুর্গতস্থান পরিদর্শন করতে বাধা দেওয়া তো ছিলই এবার ত্রান গ্রহন করার দায়ে বেধড়ক মারের পাশাপাশি মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মারের হাত থেকে রেহাই মেলেনি মহিলাদেরও। অভিযোগ তৃণমূলের পুরুষ কর্মী সমর্থকরা মহিলাদের দৈহিক হেনস্থার পাশাপাশি বেধড়ক মারধর করে মহিলাদেরও। ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের পরের দিনই যে ঈদে মাথায় সেজদা করে দোয়া মাঙতে দেখা যায় খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে।
মঙ্গলবারের এই রক্তাক্ত ঘটনার পটভূমি সেই নন্দীগ্রাম যে নন্দীগ্রাম থেকেই বিধায়ক হিসাবে নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ঘটনাস্থল সেই বিখ্যাত নন্দীগ্রাম যে নন্দীগ্রাম নিজের বুকের ওপর গড়তে যাওয়া শিল্প তালুক ফিরিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে বর্তমান শাসকদলকে। লকডাউনের পর আমফানে বিধ্বস্ত নন্দীগ্রাম, চারদিকে শুধু ভাঙা বাড়ির ধ্বংস স্তুপ, ভেঙে পড়া গাছপালার সারি, বিদ্যুৎ নেই, পানীয়জলের হাহাকার। একবার মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ঘুরে এসেছেন কিন্তু ত্রান পৌঁছায়নি সর্বত্র। ত্রানের জন্য হাহাকার।
বিজেপির অভিযোগ এমনই পরিস্থিতিতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রাম ২ নম্বর ব্লকের আমদাবাদ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬১ নম্বর বুথে ঈদদের দিন অন্তত মুখে হাসি ফোটাতে কিছু চাল ডাল আলু সর্ষে তেল ইত্যাদি দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালেই বিজেপির সেই ত্রান গ্রহন করা পরিবারগুলির ওপর হামলা চালানো হয়। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি প্রলয় গিরি বলেন, পবিত্র ইদ উপলক্ষে সোমবার ত্রাণ বিলি করেছিল বিজেপি। সেই কারণে স্থানীয় কিছু তৃণমূলের লোকজন এসে তাদের ওপর লাঠি, বাঁশ ও রড দিয়ে আক্রমণ চালায়।
আক্রান্তরাও দাবি করেছেন আক্রমনকারীরা তৃণমূলেরই লোক এবং আক্রমনের সময় তারা এই বলেই মারধর করছিল যে কেন তারা বিজেপির দেওয়া ত্রান নিয়েছে। আক্রান্তদের আরও অভিযোগ লকডাউন পর্ব এবং আমফানের তান্ডবের পর কোনও ত্রানই দেওয়া হয়নি তাঁদের। এই আক্রমণে ওই অঞ্চলের মহিলা সহ মোট ১১জন আহত হয়েছেন। বাঁশের আঘাতে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক ব্যক্তির। যদিও যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
ঘটনার পরেই স্থানীয়রা গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে রেয়াপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে বর্তমানে এলাকায় রয়েছে চাপা উত্তেজনা।